উত্তম জানা
বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল ছেড়ে একে একে চললেন বিজেপিতে। এই অবস্থায় হঠাৎ কেমন যেন উল্টো হাওয়া। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে। তাও আবার যেমন তেমন কেউ নন। দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। শুধু অর্থ নয়, একসময় প্রতিরক্ষা দপ্তরও সামলেছেন। তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। বাজপেয়ীর সরকারে দুজন একসঙ্গে ক্যাবিনেটেও ছিলেন।
বিজেপির সঙ্গে অনেকদিন ধরেই বনিবনা নেই। বিক্ষুব্ধদের তালিকায় তিনি একেবারেই সামনের সারিতে। বছর দুই আগে তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশেও দেখা গিয়েছিল যশবন্তকে। তখনই জল্পনা শোনা গিয়েছিল, এই রাজ্যের কোনও একটি আসন থেকে তিনি লোকসভায় লড়তে পারেন। যদিও শেষমেষ তা ঘটেনি।
দু বছর পর হঠাৎ তাঁর আগমন। একেবারে তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন। হঠাৎ তৃণমূলে যোগদান কেন? মুখে বলছেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মমতার হাতকতে শক্তিশালী করতে চান। দলে যোগ দেওয়ার পর সবাই এই জাতীয় কথাই বলতে চান্। কেউ উন্নয়নে শামিল হতে চান। কেউ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে চান। কেউ আবার মানুষের জন্য কাজ করতে চান।কয়েকদিন পরেই বোঝা যায়, কেন আগমন। টিকিট পেলে ভাল। টিকিট না পেলে বেসুরো গাইতেও সময় লাগে না।
যশবন্ত যদি সত্যিই বিজেপি শিবিরে গুরুত্ব পেতেন, তাহলে কি তৃণমূল শিবিরে ভিড়তেন? কখনই না। বাজপেয়ী ভাল, মোদি খারাপ, আপাতত এটাই তাঁর দর্শন। তাঁর অন্তত বিধানসভায় দাঁড়ানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া, তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও আগেই বেরিয়ে গেছে। লোকসভা ভোটও অনেক দেরি। তাহলে ? তাঁর লক্ষ্য সম্ভবত রাজ্যসভা। কয়েকদিন আগেই নাটকীয়ভাবে রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন দীনেশ ত্রিবেদী। সেই শূন্য আসনে কাউকে না কাউকে পাঠানো হবে। সর্বভারতীয় স্তরে পরিচিত কোনও মুখ রাজ্যসভায় যাক, এমনটা তৃণমূল নেত্রী চাইতেই পারেন। যশবন্তের সামনেও এখন অন্য কোনও দল থেকে রাজ্যসভায় আসার সুযোগ নেই।
কিন্তু রাজ্যসভার শূন্য আসনে তো এখনই ভোট হচ্ছে না। বিধানসভা ভোটের আগে কোনও সম্ভাবনাই নেই। যদি তৃণমূল আবার ক্ষমতায় আসে, যশবন্তের জন্য একটি আসন তোলা থাকতেই পারে। কিন্তু যদি সরকার উল্টে যায়, তৃণমূলের আসন অনেক কমে যাবে। তখন যশবন্তের জায়গা হওয়া কঠিন। তখন তিনি কদিন এই শিবিরে থাকেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মমতার হাত কতখানি শক্ত করেন, দেখার ইচ্ছে রইল।