আব্বাসের সঙ্গে জোট কি খুব জরুরি!‌

অজয় কুমার

মাস খানেক আগের কথা। এই বাংলায় এসেছিলেন আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। ফুরফুরা শরিফে গিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করলেন আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে। দুই দল মিলে জোট করে ভোটে লড়বেন, এমন ঘোষণাও করলেন।

এই আসাদুদ্দিন বিভিন্ন রাজ্যে ভোট কেটে কাদের সুবিধে করে দেন, সেকথা তো কারও অজানা নয়। বিহার ভোটের সময় বাম বা কংগ্রেস নেতারাই অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপিই ওয়াইসিকে এনেছিল। বাম–‌কং নেতারাই তো অভিযোগ করেন, ওয়াইসি বিজেপির এজেন্ট। তাহলে, এখন সেই ওয়াইসির সঙ্গী আব্বাসের সঙ্গে জোট করার এত তৎপরতা কেন?‌

গত কয়েকমাসে ওয়াইসির বিবৃতিগুলো দেখুন। স্পষ্ট কোনও অবস্থান নেই। আরও ভালভাবে বলতে হলে, চরম সুবিধাবাদী অবস্থান নিয়েছেন। সব দরজাই খোলা রেখেছেন। তিনি তৃণমূলের সঙ্গেও জোট করতে পারেন। বামেদের সঙ্গেও পারেন। ওয়াইসির সঙ্গেও পারেন। এই যার অবস্থান, তিনি ভোটের পর কতখানি বিশ্বাসযোগ্য থাকবেন!‌ বামেদের সঙ্গে জোট করে পরে সুবিধামতো তৃণমূলে ভিড়ে যাবেন না তো!‌ এমনকী বিজেপির সঙ্গে ভিড়লেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

কেন তলায় তলায় এত এত বাম ভোট বিজেপিতে চলে গেল, নেতৃত্ব কি একবারও তার মূল্যায়ণ করেছেন!‌ হ্যাঁ, তৃণমূল বিরোধী একটা বড় অংশ ভিড়েছেন বিজেপির নৌকোয়, এটা ঘটনা। কিন্তু আরও কিছু ঘটনা পরম্পরা আছে, যা বড় একটা অংশকে বিজেপির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিজেপি যখন সচেতনভাবে হিন্দুত্বের তাস খেলছে, তখন আব্বাসদের সঙ্গে এই জোটের জল্পনায় বিজেপির প্রচার আরও বেশি করে পালে হাওয়া পায়। জেনেশুনেও ফাঁদে পা দিচ্ছেন কেন?‌ এখনও তৃণমূলের দিক থেকে সম্মানজনক রফা প্রস্তাব পেলে আব্বাস তৃণমূলের দিকেই পা বাড়াবেন। এমনকী ভোটের পরেও জোটের দায়বদ্ধতা ভুলে ঠিক রফা করে নিতে পারেন। সব জেনেশুনেও এই জোট কি খুব জরুরি?‌ লাভের থেকে ক্ষতির পাল্লাটা ভারী হয়ে যাবে না তো!‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.