লকডাউনে ভ্রমণ: কাশীপুর রাজবাড়ি

সন্দীপ লায়েক

ঘুরে এলাম পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত কাশীপুর রাজবাড়ি। যেহেতু লকডাউন চলছে মাঝেমধ্যে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা, তাই জনসমাগম এড়িয়ে, দুটো বাইকে চার জন বন্ধু মিলে।

উনবিংশ শতকের শুরুতে এই কাশীপুর ছিল সংস্কৃতির একটি পীঠস্থান। স্বাভাবিক ভাবেই সেটা ছিল এই রাজবাড়ি কেন্দ্রিক। তাই এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।

রাজা নীলমনি সিংহরাও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহের সময় পুরুলিয়া ট্রেজারি লুঠ তাঁর আমলেই হয়েছিল। প্রায় তিনমাস পুরুলিয়া ইংরেজ শাসন মুক্ত ছিল। শোনা যায়, এখানে নবরত্ন সভাও বসত। বসতো ভাদু, ঝুমুর ও বিষ্ণুপুর ঘরানার সংগীতের আসর।

kashipur1

মাইকেল মধুসূদন দত্ত বেশ কিছুদিন এই রাজবাড়ির খাজাঞ্চি ছিলেন। যাই হোক, সেসব এখন ইতিহাস। এখন পড়ে আছে সময়ের আঘাতে ক্ষয়িষ্ণু বিশাল দুর্গের মধ্যে সেই ঐতিহ্য মণ্ডিত রাজবাড়ি। সদর দরজা থেকে দেখা যায় প্রসাদের চুড়া। আমরা যদিও ভেতরে ঢুকতে পাইনি। বাইরে থেকে যা দেখা যায় সেটুকুই দেখেছি। কত ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই বাড়ির সঙ্গে। টাইম মেশিনে সময়টাকে যদি কয়েকশো বছর পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত!‌ কত রোমঞ্চ এসে ভিড় করে। কলকাতার আশেপাশে হলে, এই রাজবাড়িতে কত ছবির শুটিং হত। কত ছবি তৈরি হত এই রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে। কিন্তু রাঢ় বাংলার রাজবাড়ি বলে উপেক্ষায়, অনাদরে এভাবে পড়ে আছে।

তবে দুর্গাপূজার সময় রাজবাড়ি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। অনেক দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই রাজবাড়ির পুজো দেখতে। কিন্তু এবছর করোনা মহামারীর জন্য সেটাও নাকি বন্ধ। জনশ্রুতি আছে, সামনের পুকুরটিতে নাকি মাছেদের সোনার নোলক পরিয়ে জলে ছেড়ে দেওয়া হত।

(‌লকডাউনের আবহে অনেকেই এভাবেই বেরিয়ে পড়েছেন ছোট ছোট সফরের হাতছানিতে। সেই অভিজ্ঞতার কথা লিখে পাঠান বেঙ্গল টাইমসে। কিছু কিছু লেখা বেঙ্গল টাইমসের ই–‌ম্যাগাজিনেও প্রকাশিত হবে। ঠিকানা:‌ bengaltimes.in@gmail.com) ‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.