ডা. অভিষেক দাস
অর্থপেডিক সার্জন
কলম্বিয়া এশিয়া হসপিটাল
এই ধরনের সঙ্কট বাস্তবে আমরা দেখিনি। এই জাতীয় মহামারী কীভাবে মোকাবিলা করতে হয়, সে সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণাও নেই। নিদারুণ অবস্থা বয়স্ক মানুষদের। ভাইরাসের কারণে তাঁরা ঘরের বাইরে পা রাখতে পারছেন না। আর বন্দিদশার ফলে বেড়ে যাচ্ছে হাঁটুর অস্টিও আর্থ্রাইটিসের ব্যথা।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সকাল বা সন্ধেবেলার হাঁটা প্রায় বন্ধ। গত বেশ কয়েক মাস ধরে বাড়ির সব কাজ নিজেদেরই করতে হচ্ছে। কাজের লোক অনেক বাড়িতেই আসছেন না। ফলে, পঞ্চাশোর্ধ মানুষ যাঁরা, তাঁদের ব্যথা বেড়ে গিয়েছে। গত চার-পাঁচ মাসে দেখা গিয়েছে বহু মানুষের ওজন বেড়ে গিয়েছে। তাল মিলিয়ে বেড়েছে হাঁটুর ব্যথাও।
সাধারণত পঞ্চাশ পার হলেই হাঁটুর সন্ধিস্থলে বা জয়েন্টে সমস্যা শুরু হয়। মহিলারা বেশি আক্রান্ত হন এই রোগে। লক ডাউন পর্বে হাঁটাচলা কমেছে, কমেছে শরীর চর্চাও। বাড়বাড়ন্ত হয়েছে অস্টিও আর্থ্রাইটিসের।
এর থেকে মুক্তি পাবার অনেকগুলো উপায় আছে। স্ট্রেচিং, স্ট্রেংথেনিং এক্সারসাইজ করতে হবে। বাড়িতে স্ট্যাটিক সাইকেল ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। এক্সারসাইজ করলে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি হয়। ফলে মোবিলিটি স্বাভাবিক থাকে। এর সঙ্গে যোগা করলে মানসিক সুস্থতাও বজায় থাকে।
দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবার হবে সুষম। ক্যালসিয়াম, মিনারেল সমৃদ্ধ। বহু মানুষের শরীরে ভিটামিন-ডি প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকে। তাঁদের দিনে কিছুটা সময় সূর্যের আলো নেওয়া দরকার। এবং আলাদা করে সাপ্লিমেন্ট নেওয়াও দরকার। অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার বর্জন করাই যুক্তিযুক্ত। কারণ ওজন বাড়লে যন্ত্রণা বাড়বে।
ব্যথা বাড়লে বরফ দেওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ব্রেস ব্যবহার করা যেতে পারে। স্টিক নিয়ে হাটলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। স্টিক সম্পর্কে মানুষের যে মানসিক বাধা ও জড়তা থাকে, সেটাকে সরিয়ে ফেলতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে কোনও একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যায় না। ব্যায়াম, খাওয়া দাওয়া, ওষুধ, লাইফস্টাইল মডিফিকেশনের সমন্বয়ই অস্টিও আর্থ্রাইটিসের গতি রোধ করতে পারে। তবে চূড়ান্ত পর্যায় পৌঁছলে প্রতিস্থাপনই স্বস্তি দিতে পারে।