(বাংলা ভাগের নিদান দিয়েছিলেন। ভেসে গিয়েছিল সম্মিলিত প্রতিবাদে। বিদায়ী গভর্নর জেনারেল কীভাবে দেখেছিলেন মোহনবাগানের শিল্ড জয়কে ? সেই সময়ে ফিরে গিয়ে লর্ড কার্জনের মনের কথা জেনে নিলেন মযূখ নস্কর। )
যা প্ল্যান করিয়া আসিয়াছিলাম, তাহা সফল হইল না। এখন আমি আর ইণ্ডিয়ার ভাইসরয় নই। কিন্তু সে দেশের সকল খবরই রাখি। ইণ্ডিয়া থেকে আসিবার আগে বেঙ্গলকে দুই ভাগ করিয়া আসিয়াছিলাম। ভাবিয়াছিলাম, ইহার ফলে বাঙ্গালিরা ডুর্বল হইবে। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আর মাথা তুলিতে পারিবে না। কিন্তু গত কয়েক ডিনে, যাহা হইল…।
ইণ্ডিয়াটে পা ডিয়াই বুঝিয়াছিলাম, এই বাঙ্গালিরাই হইতেছে নষ্টের গড়া। ইণ্ডিয়ার অন্য জায়গায় ব্রিটিশের বিরুদ্ধে রিভল্ট হয়, কিন্তু বাঙ্গালিরা শুঢু রিভল্ট করে না, ইহারা দেশ স্বাধীন করিতে চায়। একটি জাতি গড়িয়া তুলিতে চায়। জাতি? নেশন? Damn! আমি প্ল্যান করিয়াছিলাম, উহাদের ন্যাসানালিজমকে বুটের তলা দিয়া পিষিয়া ডিব। বাঙ্গালাকে দুভাগ করিয়া দিব। পূর্ববঙ্গের রাজধানি হইবে ঢাকা। উখানকার লোক আমাডের অনুগট থাকিবে। তাহার পর ক্যালকাটার কুত্তাগুলো আমার কী করিবে?
কিন্তু যা হইয়া গেল তাহার পর বোঢহয় এই প্ল্যান সাকসেসফুল হইবে না। মোহনবাগান! মোহনবাগান! নামটা শুনিলেই হাত বন্ধুকের দিকে ছলিয়া যাইটেছে। মনে হইতেছে, ওই ১১ জনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে ডাড় করাইয়া গুলি করি। কিন্তু কী করিবে, আমি তো আর ইণ্ডিয়াতে নাই।
এই ফুটবল খেলাটাই হইতেছে, নষ্টের গড়া। খেলার মাঠে কালা নেটিভরা টমিদের লাথি মারিতেছে, অঠচ আমরা কিছু করিটে পারিতেছি না। সারা ডুনিয়া বলিটেছে , ব্রিটিশদের কাছ থেকে খেলা শিখে নেটিভরা ব্রিটিশদেরই হারাইয়াছে। Oh God! আমি খবর পাইয়াছি, শিল্ড জিতিয়া উহারা সারা শহরে সেলিব্রেট করিয়াছে। ক্যালকাটা পুলিসের ঊচিট ছিল, মাউন্টেড পুলিশ দিয়া সেলিব্রেশন ঘুচাইয়া দেওয়া।
না। না। এখন যা সিটুয়েশন, মোহনবাগান সত্যই একটি জাতি হইয়া উঠিয়াছে।
পুলিশ ডিয়া মুভমেন্ট ঠেকানো যায় কিন্তু নেশনকে ঠেকানো যায় না। আমি বুঝিটে পারিটেছি না এই জাতিকে ঠেকাইব কী করিয়া। এই মোহনবাগানকে ঠেকাইব কী করিয়া। ইস্টবেঙ্গল, আসাম, বিহার, সব জায়গা হইটে লোক আসিয়াছিল খেলা দেখিতে। উহাদের দলে ইস্টবেঙ্গলের লোক, ক্যালকাটার লোক সবাই এক সঙ্গে খেলিয়াছে। সুকুল বলিয়া একজন নন-বেঙ্গলিও ছিল, একজন ক্রিশ্চিয়ানও ছিল।
শুনিলাম এসপ্ল্যানেডে মুসলিমরাও সেলিব্রেট করিয়াছে। Oh my God! Oh my God! কংগ্রেস যাহা পারিল না, রেভলিউশনারি পার্টিগুলি যাহা পারিল না, তাহা মোহনবাগান কেমন করিয়া পারিল?
না এখানে আর নয়। আমি আজই ক্যালকাটায় মেল টেলিগ্রাম করিব। ক্যালকাটায় থাকিয়া ব্রিটিশ এম্পায়ার চালানো যাইবে না। বেঙ্গল জুড়িয়া সো মেনি রেভলিউশনারি অরগানাইজেসনস। সব থেকে বড় রেভলিউশনারি অরগানাইজেসন হইল এই মোহনবাগান। আমি সাজেষ্ট করিব ক্যালকাটা হইতে ক্যাপিটাল ডেলহিতে সরানো হোক। পার্টিশন অফ বেঙ্গল এখন পোস্টপণ্ড।
ওয়েল আমার মাথায় নতুন একটা প্ল্যান আসিয়াছে। যডি ইন ফিউচার নর্থ বেঙ্গল, সাউথ বেঙ্গল ইট্যাডি নামে ক্লাব হয়, হিণ্ডুদের আলাডা ক্লাব, মুসলমানদের আলাডা ক্লাব হয়, তাহা হইলে মোহনবাগানকে জবড করা যাইবে। আমরা বলিব, মোহনবাগান শুঢু কলিকাটার ক্লাব, হিণ্ডুদের আলাডা ক্লাব। মোহনবাগান নেশনকে ইউনাইটেড করিটে চাহিটেছে, আমরা মোহনবাগানকে ডিভাইড করিব। পার্টিশন অফ বেঙ্গলের বডলে পার্টিশন অফ মোহনবাগান।
আজ রাটেই এই ব্যাপারে ক্যালকাটায় টেলিগ্রাম করিতে হইবে।