জয় সরকার
একুশে জুলাইয়ের পরই একঝাঁক পরিবর্তন তৃণমূলে। বেশ কয়েকটি জেলায় জেলা সভাপতি বদল। অনেককে নাকি আনা হয়েছে রাজ্য কমিটিতে। কেউ কেউ স্টিয়ারিং কমিটিতে। কেউ কেউ কোর কমিটিতে।
তৃণমূলে এই সব কমিটিগুলোর কী ভূমিকা, আজও বুঝে উঠতে পারলাম না। জেলা সভাপতি বদলের না হয় মানে বোঝা যায়। জেলায় জেলায় তবু তাঁদের কিছু করণীয় থাকে। অন্তত সংগঠনে, প্রশাসনের প্রভাব ফলানো যায়। কিন্তু রাজ্য কমিটি মানেটা কী, সেটা বোধ হয় তৃণমূল নেতারাও বোঝেন না।
শেষ রাজ্য কমিটির মিটিং কবে হয়েছিল, কেউ মনে করতে পারবেন? গত পাঁচ বছরে আদৌ কোনও মিটিং হয়েছে? টিভিতে বা কাগজে চোখে পড়েছে বলে তো মনে পড়ছে না। হ্যাঁ, নেত্রী মাঝে মাঝে ডাক দেন। কখনও জেলা সভাপতিদের। কখনও বিধায়ক ও সাংসদদের। কখনও সভাধিপতি বা মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যানদের। তাঁদের নানা রকম বার্তা দেওয়া হয়। কিন্তু নেত্রীকে বাদ দিয়ে রাজ্য কমিটি আলোচনায় বসেছে, কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমন কারও মনে পড়ছে? একটু স্মৃতি হাতড়ে দেখুন তো।
অনেক বছর ধরেই অনেকে বলেন, তৃণমূলে একটাই পোস্ট বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। কথাটা এতদিনে প্রায় প্রবাদ হয়ে উঠেছে। নেত্রী নিজেও এমন ছবিটাই তুলে ধরতে চান। আমার দলের বাকি কারও কোনও গুরুত্ব নেই, সচেতনভাবেই তিনি এই ছবিটা তুলে ধরেন।
রাজ্য কমিটির কাজটা কী হবে? ধরা যাক, প্রার্থী তালিকা। কোথায় কে প্রার্থী হবেন, এই নিয়ে দলের কোনও ফোরামে আলোচনা হয়েছে? কোনও বিতর্কের কোনও অবকাশ আছে? কারও নাম প্রস্তাব করার বা কারও নামে আপত্তি জানানোর কোনও সুযোগ আছে? নেত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে ছাপানো তালিকা তুলে দেবেন। টিভিতে লাইভ দেখানো হবে। কোচবিহারের পল্টুবাবু বা পুরুলিয়ার লাল্টু বাবু যখন জানলেন, সুব্রত মুখার্জি বা ববি হাকিমরাও তখনই জানলেন। হায় রে, তাঁদেরও দলের সিদ্ধান্ত জানতে টিভিতে চোখ রাখতে হয়।
ছবিটা কি এরপরেও বদলাবে? কোনও সম্ভাবনা নেই। হ্যাঁ, আগে ব্লকের নেতারাও নিজেদের রাজ্য কমিটির নেতা বলে দাবি করতেন। এবার একটা তবু তালিকা পাওয়া গেল। এর বেশি কিছু নয়। তাই সেই রাজ্য কমিটিতে ছত্রধর মাহাতোই আসুন বা ঋতব্রত ব্যানার্জিই আসুন, এই কমিটির কোনও মূল্য নেই। বড়জোর তাঁরা প্যাডে বা ভিডিজিং কার্ডে লিখতে পারবেন। এর বেশি কিচ্ছু নয়।
(ওপেন ফোরাম। বেঙ্গল টাইমসের জনপ্রিয় একটি বিভাগ। এখানে নানা বিষয়, নানা বিতর্ক উঠে আসে। চাইলে, আপনারাও নানা বিষয় নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরতে পারেন। )