লাল হলুদ কর্তাদের দৌড় বোঝা গেল

সরল বিশ্বাস

মোহনবাগান এবার আই এস এল খেলবে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল?‌ এখনও পর্যন্ত এমন কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এতদিন বলা হচ্ছিল, কোয়েস নানা জটিলতা তৈরি করছে। কোয়েসের কাছ থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র না পেলে অন্য স্পন্সর আসছে না। তাই আই এস এল খেলা হচ্ছে না। কিন্তু এখন তো আর সেই সমস্যা নেই। ইস্টবেঙ্গলকে তারা ছাড়পত্র দিয়ে দিল। এখন তো আই এস এলে খেলার চেষ্টা করা যেতেই পারে।

কিন্তু লাল হলুদ কর্তারা কতটা অসহায়, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। তাঁরা হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন, কখন মুখ্যমন্ত্রী ব্যাক ডোর দিয়ে কোনও একটা ব্যবস্থা করে দেবেন। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নাকি ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলেছেন। কেন, ইস্টবেঙ্গল নিজে এই উদ্যোগ নিতে পারত না?‌ ফেডারেশন সভাপতি বা নীতা আম্বানি কি এতটাই দূর গ্রহের মানুষ, যাঁদের সঙ্গে ক্লাবের পক্ষ থেকে কথা বলা যায় না?‌ প্রথম সারির একটা ক্লাবের সঙ্গে যদি কথা বলার সময় না থাকে, তাহলে তাঁরা ফেডারেশন সভাপতি হয়েছেন কেন?‌

east bengal100

আর ক্লাবকর্তাদেরও বলিহারি। এতদিন কত বড় বড় ভাষণ। কিন্তু এখন তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সেই মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। কবে তিনি দয়া করে একটা স্পন্সর জোগাড় করে দেবেন!‌ কিন্তু শুধু মুখ্যমন্ত্রীর কথায় কোনও কোম্পানিই বছরে তিরিশ–‌চল্লিশ কোটি দিতে রাজি হবে না। তাই ভরসা, সরকারি টাকায় পালিত কোনও সংস্থা যদি এগিয়ে আসে। যেমন মাদার ডেয়ারি, সিটিসি, বেনফেড–‌এইসব। কিন্তু এইসব সংস্থা যদি কোনও ক্লাবকে টাকা জোগাতে যায়, পরে নানা সমস্যা হতে পারে।

ছোট ক্লাব বা নানা সংস্থা সরকারের দ্বারস্থ হয়, তার একটা মানে বোঝা যায়। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবকে এভাবে সরকারের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হবে কেন?‌ এত বড় একটা ব্র‌্যান্ড। দেশে–‌বিদেশে এত সমর্থক। এত ঘটা করে সেলিব্রিটিদের সংবর্ধনা দেন। তাঁরা কোনও উদ্যোগ নিতে পারছেন না?‌ আগে তো খুব হুঙ্কার ঝাড়ছিলেন, কোয়েস চলে গেলে নতুন স্পন্সর পেতে সমস্যা হবে না। তাহলে, এখন মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন কেন!‌ মুখ্যমন্ত্রী না বুঝে প্রথমে হয়ত আশ্বাস দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, এটা দারুণ একটা কাজ হতে চলেছে। হয়ত দারুণ প্রচার পাওয়া যাবে। কিন্তু এটাই ব্যুমেরাং হয়ে উঠতে পারে। ইস্টবেঙ্গলকে সরকার যদি টাকা জোগায়, সেটা মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তখন হয়ত বোঝেননি। এখন নিশ্চয় কেউ না কেউ বুঝিয়েছেন। ভোটের মুখে এমন ঝুঁকি তিনি নেবেন!‌ মনে তো হয় না।

পরে অন্য স্পন্সর হয়ত জুটে যাবে। কিন্তু এই লাল হলুদ কর্তাদের দৌড় কতদূর, সেটা অন্তত বোঝা গেল।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.