রজত সেনগুপ্ত
কবে ভোট হবে, তার কোনও ঠিক নেই। আদৌ হবে কিনা, তাও জানা নেই। এর মধ্যেই নির্বাচন কমিশন নিদান হেঁকে দিল। ৬৫–র বেশি বয়সীরা ভোট দিতে যাবেন না। তাঁরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন।
কথাটা শুনতে ভাল। কিন্তু আমাদের দেশের বাস্তবতায় তা উল্টো ফল দিতে পারে। হীতে বিপরীতত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি।
একটা গোটা দেশের সাধারণ নির্বাচন। অন্তত কুড়ি শতাংশ মানুষ আছেন, যাঁদের বয়স ৬৫–র বেশি। একশো তিরিশ কোটির নিরিখে সংখ্যাটা কত দাঁড়াবে, কোনও ধারণা আছে! এত মানুষের পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়া সম্ভব? সেই ব্যালট ঠিকঠাক পৌঁছবে তো? সেই ভোট ঠিক জায়গায় পৌঁছবে তো?
একজন পচাত্তর বছরের বৃদ্ধ। তিনি কীভাবে ব্যালট সংগ্রহ করবেন, কীভাবে, কার মাধ্যমে সেই ব্যালট পাঠাবেন? ধরা যাক, ব্যালট এল। সন্ধেবেলায় বন্দুক নিয়ে পাড়ার পল্টুরাও এল। মেসোমশাই, ব্যালটটা দিয়ে দিন, আমরা ফেলে দেব। সেই ‘মেশোমশাই’ কী করবেন? বুথেই প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে পারছে না। বাড়িতে বাড়িতে নিরাপত্তা দেবে? আমাদের নির্বাচন কমিশনের সেই মেশিনারি আছে? প্রশাসনের সেই বিশ্বাসযোগ্যতা আছে? যার যেখানে ক্ষমতা, সে সেখানে ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। এটা আটকানোর কোনও উপায় নেই। বরং, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়া তাঁর কাছে অনেক বেশি নিরাপদ।
তাই, উদ্ভট ভাবনা ছেড়ে বাস্তবের মাটিতে নেমে আসুক নির্বাচন কমিশন। নতুন নিয়ম চালু করতে গিয়ে যেন আরও বড় বিপদ ডেকে আনবেন না।