সহজ সমস্যা, অহেতুক জটিল করছে প্রশাসন

 

সুমিত চক্রবর্তী

open forum4

যেটা সহজে করা যায়, সেটা অহেতুক জটিল করাই রাজ্য সরকারের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১)‌ প্রশাসন যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। ২)‌ যাঁদের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁদের অভিজ্ঞতা নেওয়াও হয় না। ৩)‌ ভয়ের বাতাবরণ, ফলে কেউ সিদ্ধান্ত নিতেও পারেন না। আর এর ফল ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে।

পরিবহণের কথাই ধরা যাক। দীর্ঘদিন লকডাউনের পর বাস চালাতেই হত। কিন্তু বাস চালানো নিয়ে অহেতুক জটিলতা তৈরি হল। প্রথমে অদ্ভুত একটা ভাড়ার তালিকা হল। সরকার কার্যত মেনেও নিল। পরে হঠাৎ করে বলা হল, এই ভাড়া বৃদ্ধি মানা যাবে না। ওই ভাড়াতেই বাস চালাতে হবে। আবার বলা হল, যতগুলো সিট, তার বেশি প্যাসেঞ্জার নেওয়া যাবে না।

ভরতুকি দিয়ে বাস মালিকরা যে বাস চালাবেন না, এটা শুরুতেই বোঝা উচিত ছিল। ফলে, নামমাত্র বাস রাস্তায় নামল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস নেই। যদিও বা একটা এল, তাতে ওঠার জন্য যে হুড়োহুড়ি, এতদিনের লকডাউন একলহমায় চুলোয় গেল।

bus4

ন্যূনতম ভাড়া বাড়াতে আপত্তি কীসের?‌ সাত টাকার জায়গায় দশ টাকা করা যেতেই পারত। প্রতি স্ল্যাবে তিন টাকা বাড়ালে যাত্রীদের খুব একটা আপত্তি থাকত বলে মনে হয় না। একঘণ্টা অপেক্ষা করার থেকে, ভিড় বাসে গাদাগাদি করে যাওয়ার থেকে তিন টাকা বেশি দিয়ে যেতে যাত্রীরা স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে যেতেন। বাস মালিকদের বলা যেতে পারত, এই বর্ধিত ভাড়া আপাতত তিন মাসের জন্য। পরে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কিন্তু সরকার ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা করবে না। দেখো, আমরা ভাড়া বাড়াচ্ছি না এটা বলেও কৃতিত্ব নিতে হবে। এদিকে, পরিবহণমন্ত্রী বা সচিব নামেই বৈঠক করছেন। এইসব বৈঠকের কী মূল্য আছে!‌ সেই তো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

বাস মালিকরাও তেমনি। যখন সরকারি বৈঠক, তখন নিজেদের দাবির কথা জোরের সঙ্গে বলতে পারছেন না। তখন সব ঘাড় নেড়ে শুনে নিচ্ছেন। পরে বলছেন, এই ভাড়ায় চালানো যাবে না। সেটা সরকারি বৈঠকে জোরের সঙ্গে বলতে পারেন না কেন?‌ ফলে, প্রতিটি মিটিং থেকে কার্যত অশ্বডিম্ব প্রসব হয়।

সহজ একটা বিষয়। অহেতুক জটিল হয়ে যাচ্ছে।

 

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.