অনলাইনে একটা ব্রিগেড হয়ে যাক

রজত সেনগুপ্ত

সত্যিই, এই লকডাউন কত সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়ে গেল। নোটবাতিলের সময় অনলাইন, ডিজিটাল এই শব্দগুলো খুব শোনা যেত। কয়েক মাস যেতে না যেতেই শব্দগুলো কেমন হারিয়ে গেল। আবার সেই শব্দগুলোকেই ফিরিয়ে আনল লকডাউন।

অনলাইনে ক্লাস। অনলাইনে সিনেমার শুটিং। অনলাইনে সিনেমার মুক্তি। এসবের পাশাপাশি এবার অনলাইন সভার কথাও শোনা যাচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আগেও সভা হয়েছে। কিন্তু এবার তাতে আরও কর্পোরেট ছোঁয়া। মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করছেন দলের জেলা সভাপতি, বিধায়কদের সঙ্গে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও ঠিক করলেন, দলের কর্মীদের কাছে ভাষণ দেবেন। কোথায় কোথায় সেই লিঙ্ক পাঠাতে হবে, কীভাবে শোনা যাবে, তা ঠিক করে দেবে সাইবার টিম।

maidan2

একটা নতুন সম্ভাবনার দরজা কিন্তু খুলে গেল। আগামীদিনে ব্রিগেড বা শহিদ মিনারের সভাও অনলাইনে করা যায় কিনা ভাবা যেতে পারে। এত দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আনা বেশ ঝামেলার ব্যাপার। অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নাও। প্রচুর খরচ। ট্রেনে আনার ব্যবস্থা করো। বাস ভাড়া করো। থাকার ব্যবস্থা করো। খাওয়ার ব্যবস্থা করো। এরপরেও যাঁরা আসবেন, তাঁদের সভাস্থলে আনা মুশকিল। কেউ ভিক্টোরিয়ায়, কেউ চিড়িয়াখানায় চলে যান।

ধরা যাক, কোনও একটি দলের সভা রবিবার। সেদিন বেশ কয়েকটি চ্যানেলে কয়েক ঘণ্টার স্লট কিনে নিলেই হল। তারা সকাল থেকে এই সংক্রান্ত নানা খবর দেখিয়ে যাবেন। নিদেনপক্ষে জনসভার ওই দু–‌তিন ঘণ্টা লাইভ দেখাবেন। মাঠে ছোটখাটো একটা মঞ্চ থাকলেই হল। জনতা থাকার দরকার নেই। সেখান থেকেই ফাঁকা মাঠে ভাষণ দেবেন। টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ হবে। আগে থেকেই লিঙ্ক পৌঁছে যাবে, সেই সময়ে নোটিফিকেশন যাবে। ক্লিক করলেই সরাসরি জনসভায়।

আজকে ভাবনাটা অবাস্তব মনে হতেই পারে। কিন্তু আগামীদিনে এটাই যে বাস্তবতা হয়ে উঠবে না, কে বলতে পারে!‌ মুখ্যমন্ত্রী আজ নবান্ন বা তৃণমূল ভবন থেকে বলছেন। আগামীদিনে ব্রিগেড থেকে পরীক্ষা করে দেখতেই পারেন। অন্য দলগুলিও পরীক্ষা করে দেখতেই পারে। জনহীন জনসভা, ব্যাপরটা কিন্তু মন্দ হবে না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.