পরিযায়ীদের তালিকা তৈরি করতে পঞ্চায়েতকে কাজেই লাগানো হল না!‌

সরল বিশ্বাস

প্রশাসন চালানোটা যার–‌তার কম্ম নয়। এই সঙ্কটের সময় সেটা আরও বেশি করে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

করোনা সঙ্কটে সারা পৃথিবীই দিশেহারা। মৃত্যু মিছিল বাড়ছে। বাংলা সেই মানচিত্রের বাইরে থাকবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা থাকলে সেই সমস্যাকে অনেকটাই কমিয়ে আনা যেত। যেটা এই রাজ্যের আসল সম্পদ হয়ে উঠতে পারত, সেটাকে ব্যবহার করাই হল না।

শুধু পরিযায়ী শ্রমিকদের কথাতেই আসা যাক। কোথায় কতজন পরিযায়ী শ্রমিক আটকে আছেন, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে কোনও তথ্যই নেই। কোন ব্লক থেকে কতজন বাইরে আছেন, সে ব্যাপারেও প্রশাসনের কর্তারা সম্পূর্ণ অন্ধকারে।

sromik6

অথচ, অনায়াসেই এই তালিকা তৈরি করা যেত। বড়জোর দুদিন লাগত। আসলে, কলকাতায় বাস করে যাঁরা বাংলা চালানোর কথা ভাবেন, পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণাই নেই। হাজার ত্রুটি বিচ্যুতি আছে। দুর্নীতি আছে। তারপরেও একটা গ্রাম পঞ্চায়েত কতখানি কার্যকরি হয়ে উঠতে পারে, সে সম্পর্কে এঁরা প্রায় কিছুই জানেন না।

ধরা যাক, রামবাবু একজন পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁর পক্ষে নিজের এলাকার তালিকা তৈরি করা কোনও ব্যাপারই নয়। একঘণ্টাও লাগবে না। অর্থাৎ, তিনি চাইলে একদিনের মধ্যে অঞ্চল প্রধানকে তালিকা দিতে পারেন। প্রধান দেবেন বিডিও–‌কে। তিনি দেবেন ডিএম–‌কে। এখন প্রযুক্তি অনেক উন্নত। হাতে হাতে দিয়ে আসারও দরকার নেই। হোয়াটসঅ্যাপ মারফত দ্রুত পৌঁছে যাবে রাজ্যের কাছে। অর্থাৎ, কোন ব্লক থেকে, কোন অঞ্চল থেকে কতজন বাইরে আছেন, একটু চেষ্টা করলেই তা জানা যায়। ভাবতে অবাক লাগে, এতদিন পরেও সেই চেষ্টা শুরুই হল না। তার বদলে মুখ্যমন্ত্রী কিনা তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের বললেন তালিকা করতে।

যেটা জেলাশাসকদের বলা দরকার, সেটা তিনি বললেন দলের জেলা সভাপতিদের। নিশ্চিত থাকুন, আরও এক মাস পেরিয়ে যাবে। তারপরেও সেই তালিকা তৈরি হবে না।

সব শিষ্টাচার ও সৌজন্য বজায় রেখেও বলতেই হচ্ছে, এই কঠিন সময়েও তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উঠতে পারলেন না।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.