এখানেও ছবি তোলার লোভটা সামলানো গেল না!

সরল বিশ্বাস

পরপর দুদিন কাগজে দুটো ছবি। অ‌ভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় ও মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।খবরে প্রকাশ, মন্ত্রী নাকি ফোনে খোঁজ নেন সাবিত্রীর। তিনি নাকি বলেন, বাজার করতে সমস্যা হচ্ছে। শুনেই মন্ত্রীর প্রাণ কেঁদে উঠল। তিনি বাজারের থলি নিয়ে সটান পৌঁছে গেলেন অভিনেত্রীর কাছে। পরেরদিন গেলেন ডাক্তার নিয়ে।

পরপর দুদিনের ছবিই ছাপা হল অধিকাংশ বাংলা কাগজে। মন্ত্রী বাজার করে দিচ্ছেন প্রবীণ অভিনেত্রীর জন্য। মন্ত্রী ডাক্তার নিয়ে যাচ্ছেন। এমন ছবি কাগজে বেরোবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এই ছবি সব কাগজে পৌঁছে গেল কীভাবে? পাঠক এত তলিয়ে ভেবে দেখে না। তাই প্রশ্নও করে না।

sabitri

আসল কথা হল, গোটাটাই একটা ইভেন্ট। ছবি তোলানোর জন্যই এই ইভেন্ট। বাজার করা, ডাক্তার নিয়ে যাওয়া সবই গৌণ। ছবি তোলাটাই মুখ্য। সাবিত্রী নিশ্চয় ছবি তোলানোর জন্য লালায়িত ছিলেন না। অঙ্কটা পরিষ্কার, মন্ত্রী নিজেই ফটোগ্রাফার নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর সেই ছবি হোয়াটসঅ্যাপ মারফত ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন কাগজের অফিসে। এমনিতে সরকারি বিজ্ঞাপনের আনুকূল্যে চলা কাগজকে এই ছবি ছাপতে হত। তার ওপর যদি মন্ত্রী নিজে পাঠান, মন্ত্রী নিজে ছাপার জন্য অনুরোধ করেন, তাহলে তো না ছেপে পারা যায় না।

ভাবতেও অবাক লাগে, রাজ্যের প্রথমসারির মন্ত্রীরা প্রচারের জন্য কতটা কাঙাল হতে পারেন। সব জায়গাতেই তাঁদের ফটোগ্রাফার নিয়ে যেতে হয়। ছবি প্রচার করতে হয়। একজন প্রবীণ অভিনেত্রীর কাছে বাজার নিয়ে যাচ্ছেন, এটা সত্যিই ভাল উদ্যোগ। প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কিন্তু সেটা ঘটা করে প্রচার করা খুব জরুরি। এতে সেই অভিনেত্রীর সম্মান বাড়ে! নাকি তাঁকে অপমান করা হয়।

কাউকে কোনওকিছু দেওয়া ভাল। কিন্তু তা ঢাক পিটিয়ে প্রচার করা ঠিক ততটাই খারাপ। এই সহজ কথাগুলো প্রচারপ্রিয় মন্ত্রীমশাইকে বলার লোক নেই। সত্যিই, এঁদের কোনও ভাল বন্ধু নেই। তাই, দিনের শেষে এঁদের শুধু করুণাই করা যায়।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.