পাস-ফেল নেই, ঢাক পেটানো খুব জরুরি ছিল!

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: হবু রাজা আর গবু মন্ত্রী পড়েছিলেন মহা ফ্যাসাদে। বাইরে বেরোলেই এত ধুলো। পা নোঙরা হয়ে যাচ্ছে। কী করা যায়! নানা লোকের নানা বুদ্ধি। কেউ জল দিয়ে পৃথিবীটাকে ধুইয়ে দেওয়ার নিদান দিলেন। কেউ আবার পৃথিবীটাকেই চামড়া দিয়ে ঢাকার পরামর্শ দিলেন। অবশেষে ডাক পড়ল চর্মকারের। তিনি বললেন, পৃথিবীটাকে চামড়া দিয়ে না ঢেকে নিজের পা দুটোকে চামড়া দিয়ে ঢাকলেই তো মিটে যায়।

বাংলার সকারের কাছে এমন কোনও চর্মকার নেই।এঁদের যাঁরা বুদ্ধিদাতা, তাঁরা কেউ পৃথিবী ঢাকার পরামর্শ দেন। কেউ আবার সব জল দিয়ে রাস্তা ধোয়ার পরামর্শ দেন। গবুচন্দ্ররা বড়ই অসহায়। একের পর এক সিদ্ধান্তে তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। কয়েক মাস আগেই বানান ভুল সম্পর্কে নির্দেশিকাটা নিশ্চয় মনে আছে। ঘোষণা হল, বানান ভুল হলেও এবার থেকে নম্বর কাটা যাবে না। এমনিতেই বানান নিয়ে আমাদের সচেতনতা ভয়াবহ। শাসকদলের এমন পোস্টার বা ফ্লেক্স খুব কম পাওয়া যাবে, যেখানে মারাত্মক রকমের বানান ভুল নেই। এমনকি সরকারি পোস্টার, ব্যানারের ক্ষেত্রেও তাই। পেটোয়া এজেন্সিকে দিয়ে বিজ্ঞাপন করালে যা হয়!

সহজ কথা হল, সরকার মনে করতেই পারে, বানান ভুল হলে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু সেটা ঢাক পিটিয়ে বলাটা খুব জরুরি ছিল? ছাত্রদের কাছে কী বার্তা গেল? আর বানান নিয়ে ভাবার দরকার নেই। যা হোক, কিছু একটা লিখলেই হল। যাঁরা খাতা দেখবেন, তাঁদের চুপি চুপি বার্তা দিলেই চলত। তার বদলে ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা। এখানেও কৃতিত্ব নেওয়ার কী হাস্যকর চেষ্টা।

school

এবার করোনা। ঘোষণা হল, নবম শ্রেণি পর্যন্ত কাউকে ফেল করানোর দরকার নেই। এক্ষেত্রেও ঘোষণা করে কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা। অন্যান্য বোর্ডেও তো অনেকেই পড়াশোনা করা। তারা এরকম কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে বলে শোনা যায়নি। এটা ঘটনা, করকোনার কারণে, স্কুল বন্ধ। টিউশনিও বন্ধ। কিন্তু ফেল করানো হবে না, এটা ঢাক পিটিয়ে বলে দেওয়া কি খুব দরকার ছিল? ডিআই মারফত স্কুলগুলিকে গোপনে জানিয়ে দিলেই তো হত। তাহলে অন্তত ছেলেরা পড়াশোনাকে এত হালকাভাবে নিত না। এমনিতেই বিরাট একটা অংশের ছেলেরা মোবাইল নিয়েই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটায়। পড়ার বইয়ের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক থাকে না। তারপর এরকম একটা ঘোষণায় তারা কি আরও বেপরোয়া হযে যাবে না? এখানেও সরকারকে কৃতিত্ব নিতেই হবে! ভাগ্যিস বলা হয়নি মুখ্যমন্ত্রীর অণুপ্রেরণায় সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হল। কী জানি, পারিষদবর্গের যা নমুনা, তাতে এরকম ঘোষণা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.