এক দেশের অধিনায়কের প্রাণ সংশয়। রক্ত দিতে এগিয়ে এলেন আরেক দেশের অধিনায়ক। একজন নরি কন্ট্রাক্টর, অন্যজন স্যার ফ্র্যাঙ্ক ওরেল। ৫৭ বছর আগে, এই দিনে এমনই এক ঘটনা। রয়ে গেছে ক্রিকেটের লোকগাথা হয়ে। লিখেছেন সিকিম সেন।
স্যার ফ্র্যাঙ্ক ওরেল। ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে নামটি অজানা নয়। উইকিপিডিয়া ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, জন্ম ১ আগস্ট, ১৯২৪। মৃত্যু ১৩ মার্চ, ১৯৬৭। অর্থাৎ এই ৩ ফেব্রুয়ারি ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের জন্মদিনও নয়, মৃত্যুদিনও নয়। তবু এই দিনটি কেন ফ্র্যাঙ্ক ওরেল দিবস হিসেবে পালন করা হয়? শুধু খেলার জন্য নয়, অন্য একটি কারণে ক্রিকেট দুনিয়ায় স্মরণীয় হয়ে আছেন এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। এক অধিনায়কের জীবন সংশয়। প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন আরেক অধিনায়ক।
সময়টা ১৯৬২। ভারতের অধিনায়ক নরি কন্ট্রাক্টর। সেবার চার্লি গ্রিফিথ যেন বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন। ব্যাটসম্যানদের হেলমেট পরার প্রথা তখনও চালু হয়নি। গ্রিফিথের বলে মুহূর্তের জন্য চোখ সরে গিয়েছিল কন্ট্রাক্টরের। চোট লাগে মাথার খুলিতে। ৬ দিন জ্ঞান ছিল না ভারত অধিনায়কের। মাথায় গুরুতর অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। অনেক রক্তের দরকার ছিল। প্রথম এগিয়ে এসেছিলেন বিপক্ষের অধিনায়ক ফ্র্যাঙ্ক ওরেল।
সেবার প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন কন্ট্রাক্টর। তবে মাত্র ২৮ বছর বয়সেই ক্রিকেট থেকে সরে যেতে হয়। সেই দিন ওরেলের রক্তে প্রাণ বেঁচেছিল কন্ট্রাক্টরের। তাই দিনটিকে ফ্র্যাঙ্ক ওরেল দিবস হিসেবে পালন করে সিএবি। প্রতি বছর এই দিনে হয় রক্তদান। মাঠে মারামারি, বিতর্কের ঘটনা মাঝে মাঝেই শিরোনামে আসে। কিন্তু এক অধিনায়ক আরেক অধিনায়ককে রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচাচ্ছেন, এমন ঘটনাও ঘটে। এইসব টুকরো টুকরো ঘটনাই বোধ হয় ক্রিকেটকে আরও মহান করে তুলেছে।