নিঃশব্দে দেউলিয়া করবে লটারি, আসুন জমিয়ে শীতঘুম দেওয়া যাক

অজয় কুমার

গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে যেন লটারি লাগার ধুম পড়ে গেছে। কোথাও দিনজমুরের ছেলে রাতারাতি কোটিপতি। কোথাও চা বাগানের শ্রমিক কোটিপতি। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ। আধা শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম। কাগজে ফলাও করে সেসব ছাপাও হচ্ছে।
লটারি হঠাৎ শুরু হল, এমন নয়। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। কিন্তু এই কোটিপতি হওয়ার হিড়িকটা মাত্র কয়েকদিনের। লটারি কোম্পানিগুলো হঠাৎ করে এত উদার হয়ে গেল কেন?‌ এর মধ্যে কোনও ফাঁদ নেই তো!‌

lottery
অনেক বাঙালি হঠাৎ করে বড়লোক হতে চায়। তাই সে চিটফান্ডে মনের সুখে টাকা রাখে। ভাবে, তিন বছরেই বুঝি ডাবল হয়ে গেল। তাই সে রেসের মাঠে ভিড় করে। তাই সে মেলা হলেই জুয়ার ঠেকে হাজির হয়ে যায়। শর্টকার্ট রাস্তাটা সে ঠিক চিনে নিয়েছে। চিটফান্ড নেই বলে কারও কারও কী হাপিত্যেস!‌ এত এত টাকা চোট যাওয়ার পরেও কোনও শিক্ষা হয়নি। সে বড়লোক হওয়ার নতুন নতুন ফন্দিফিকির খোঁজে। এবার সে পেয়েছে লটারি।
এখন আর নিছক একটাকা, দু টাকার টিকিট নয়। একশো টাকা, দুশো টাকা দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে টিকিট কাটছে। কেউ কেউ আবার হাজার টাকা দিয়েও টিকিট কাটছে। গত কয়েকদিনে লটারি নিয়ে নানা খবর এমনিতেই ভাইরাল হয়েছে। যাঁরা চিটফান্ডে টাকা রাখতেন, তাঁদের কাছে এই বার্তাটা পৌঁছে গেছে, লটারির টিকিট কেটে সহজে বড়লোক হওয়া যায়। এই স্বপ্নটা অনেকে ঘুমের ঘোরে দেখতেও শুরু করেছেন।
সরকার নামক বস্তুটি আপাতত চোখ বন্ধ করেই থাকবে। লটারি কোম্পানিগুলো জানে, কীভাবে ফাঁদ পাততে হয়। এখন এখানে–‌সেখানে দু চারজন কোটিপতি হবেন। কাগজে ঢালাও বিজ্ঞাপন চলছে। ফলে, এইসব খবরও কাগজে, চ্যানেলে গুরুত্ব পাবে। আর কোথায় কোথায় কী কী প্রণামী দিতে হয়, সেটাও বিলক্ষণ জানা আছে। নিঃশব্দে পকেট খালি হচ্ছে মধ্যবিত্ত আর প্রান্তিক মানুষের। আস্তে আস্তে তা মহামারির চেহারা নেবে।
আসুন, জমিয়ে একটা শীতঘুম দেওয়া যাক।।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.