উত্তম জানা
যখন তিনি অধিনায়ক হয়েছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটে তখন গড়াপেটার কালো ছায়া। সেই অন্ধকার থেকে আলোয় ভারতীয় ক্রিকেটকে তুলে এনেছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। ভারতীয় ক্রিকেট থেকে প্রাদেশিকতা একেবারেই মুছে ফেলেছিলেন। একেবারে নতুন আঙ্গিকে গড়ে উঠেছিল টিম ইন্ডিয়া।
এবার তিনি বোর্ডের শীর্ষে। বোর্ডের অবস্থাও কিছুটা একইরকম। গত চার বছর ধরে বোর্ডের কার্যত অস্তিত্বই নেই। কে যে দায়িত্বে ছিলেন, কী কী হয়েছে, দেশের আমজনতা জানেনও না। এখান থেকে ভারতীয় ক্রিকেটে কতটা টেনে তুলতে পারবেন সৌরভ?
কোনও সন্দেহ নেই, একটা বড় ঝাঁকুনি দেবেন। দিন রাতের টেস্ট চালু হবে। টেস্টে দর্শক সংখ্যা বাড়বে। ঘরোয়া ক্রিকেট আরও উন্নত হবে। ক্রিকেটারদের বিদায় আরও সম্মানজনক হবে। আরও বেশি প্রাক্তন ক্রিকেটাররা বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত হবেন।
কিন্তু দশ মাস পরেই তাঁকে নাকি সরে যেতে হবে। ক্রিকেটের সঙ্গে যাঁদের কোনও সম্পর্ক ছিল না, তাঁরা বছরের পর বছর বোর্ডে থেকে গেছেন। অথচ, যে মানুষটা ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন দিশা দেখাতে পারেন, তাঁর জন্য সময় মাত্র দশ মাস! দশ মাসে অনেক পরিকল্পনা হয়ত নেওয়া যায়। কিন্তু তার বাস্তবায়নের জন্য এই সময়টা বড্ড কম। যেমন, ভারত কোথায় কোথায় খেলবে, সেই সূচি অনেক আগেই তৈরি। ফলে, চাইলেও এখানে নতুন কিছু করা সম্ভব নয়। এই দশ মাসে নতুন অ্যাকাডেমি বা স্টেডিয়াম করা সম্ভব নয়। রাতারাতি টেস্ট ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করাও মুশকিল। নতুন খেলোয়াড় তুলে আনার ক্ষেত্রেও এটা বড্ড কম সময়।
আগের বোর্ডের কর্তারা কী কী অনাচার করে গেছেন, তার জন্য সৌরভের হাত পা বেঁধে দেওয়া হবে কেন? তাঁকে আরও সময় দেওয়া হোক। স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হোক। অন্তত ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে নিয়ম বদল করা হোক। যাঁরা প্রাক্তন ক্রিকেটার বা প্রাক্তন অধিনায়ক, তাঁদের ক্ষেত্রে কুলিং অফের এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়, এই মর্মে একটা পাল্টা আইন তৈরি হোক। দরকার হলে দশ বছরের জন্য ভাবা হোক। কারণ, এমন বোর্ড সভাপতি ভারতীয় ক্রিকেটে এর আগে কেউ আসেননি। ভবিষ্যতেও কেউ আসবেন না।