প্রসূন মিত্র
সত্যিই, সিবিআই কত তৎপর। রাজীব কুমারকে কোথায় কোথায় না খুঁজে বেড়াচ্ছে। অন্তত তিরিশটি জায়গায় হানা দেওয়ার খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। না জানি, আরও কোথায় কোথায় গেছে।
রাজীব কুমারকে অন্তত একটা কারণে ধন্যবাদ। সিবিআই নামক বস্তুটি যে কতটা অপদার্থ, আরও একবার সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। যাঁরা কথায় কথায় সিবিআই চেয়ে বসতেন, তাঁরা এবার ভাবুন। এতদিন ধরে পুলিশের এমন একজন কর্তাকে তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না। এখান–ওখানে হাতড়ে বেড়াচ্ছেন।
আসলে, সারদা তদন্তে শুরু থেকেই চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সিবিআই। যেটা সাতদিনে তদন্ত হতে পারত, পাঁচ বছর পরেও তাঁরা কার্যত মাছি তাড়াচ্ছেন। সিবিআই তদন্তের বিরোধীতা করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গেছে। সিবিআই কি আশা করেছিল রাজ্য পুলিশ তদন্তে দারুণ সহযোগিতা করবে! তথ্য প্রমাণ লোপাটের কথা একটা বাচ্চা ছেলেও জানে। অথচ, পাঁচ বছর পর সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ নাকি তদন্তে সহযোগিতা করছে না। কিছু তথ্যপ্রমাণ নাকি লোপাট করা হয়েছে। হায় রে! যেটা একদিনে জানার কথা, এই সহজ সত্যিটা বুঝতে পাঁচ বছর লেগে গেল!
বেশ কয়েকবার নাকি রাজীব কুমারকে ডাকা হয়েছিল। তিনি নাকি এড়িয়ে গেছেন। রাজীব কুমার একের পর এক চিঠিকে পাত্তা দেওয়ার সাহস পেলেন কোথা থেকে? আসলে, রাজীব জানতেন, সিবিআই কিচ্ছু করতে পারবে না। তিনি জানতেন, তদন্ত শুরু হলেই কীভাবে বারবার থামিয়ে দেওয়া হয়। কাদের নির্দেশে সেই তদন্ত বারবার শীতঘুমে চলে গেছে, সেটা বুঝতেও কোনও গোয়েন্দা হওয়ার দরকার পড়ে না। রাজীব সিবিআইকে উপেক্ষা করে গেছেন, কারণ সিবিআই এই উপেক্ষারই যোগ্য।
যেটা সাতদিনে সমাধান হয়, সেটা পাঁচ বছর ফেলে রাখলে এমনটাই হয়। তাই এখন সিবিআইকেই লেজে গোবরে মনে হচ্ছে। রাজীবের বিচার পরে হবে, এই অপদার্থ কর্তাদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।