বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন: এই রাজ্যে কি এন আর সি চালুর কোনও সম্ভাবনা আছে? পরে কী হবে, বলা মুশকিল। তবে, আপাতত তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কেন্দ্র চাইলেও নয়। রাজ্য বিজেপি লাফালাফি করলেও নয়। তাহলে, এন আর সি নিয়ে বিধানসভায় একযোগে প্রস্তাব আনতে হল কেন?
সরকারিভাবে বিধানসভায় বিজেপির সদস্য এখন ৬। তাঁরা বাদ দিলে বাকি সবাই একদিকে। অর্থাৎ, তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম সবাই একযোগে জানিয়ে দিল আমরা এন আর সি চাই না। কে জানতে চেয়েছে? কে চালু করতে বলেছে? তাহলে আগ বাড়িয়ে এসব বলার কী মানে?
এই রাজ্যে এখন এন আর সি হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। রাজ্য সরকার না চাইলে কখনই তা জারি করা যায় না। রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদল ঘটলে কী হবে, বলা মুশকিল। কিন্তু যতক্ষণ না বিজেপি আসছে, ততক্ষণ নিশ্চয় এন আর সি প্রক্রিয়া শুরু হবে না। তাহলে, আগ বাড়িয়ে বিধানসভায় তা নথিবদ্ধ করার কী দরকার ছিল?
এন আর সি নিয়ে যত আলোচনা হবে, তাতে বিজেপিরই লাভ। তারা উন্নয়নের মানদন্ডে পিছিয়ে গিয়ে কখনও কাশ্মীর, কখনও পাকিস্তান, কখনও হিন্দু, কখনও এন আর সি এসব করে গুলিয়ে দিতে চাইছে। সেই ফাঁদে বিরোধীরাও পা দিচ্ছে। তাঁদের আলোচনা থেকেও উন্নয়ন হারিয়ে যাচ্ছে। যেসব আলোচনা বিজেপি চায়, সেই আলোচনাতে বিরোধীরাও মেতে থাকছে।
বিজেপি যতই দাবি তুলুক, এই দাবিকে বিশেষ পাত্তা দেওয়ারই দরকার নেই। যত আলোচনা হবে, তত বিজেপিরই সুবিধা। বুঝে হোক, না বুঝে হোক, অনেকে সেদিকেই ঝুঁকে যাবেন। বিধানসভায় এটা নথিবদ্ধ হয়ে গেল মানে, বাংলায় এই বাস্তবতাকে কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হল। ৬ জনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে কিনা সব দলকে এক হতে হল!
তাছাড়া, যারা তৃণমূলের পক্ষে এন আর সি চাই না বলে ভোট দিলেন, তাঁদের অনেকেই বিজেপির দিকে ঢলে পড়বেন। তখন তাঁরা কোন পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, এগুলোর কোনও মূল্যই থাকবে না। আয়ারাম–গয়ারামের সংস্কৃতি থেকে তো বিধানসভাও মুক্ত নয়। দিনের পর দিল বিরোধী বিধায়কদের শাসক শিবিরে টানা হয়েছে। স্পিকার মশাই চোখ বুজে থেকেছেন। বিধানসভার মর্যাদাকে তলানিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই বিধানসভায় এই প্রস্তাবের তেমন কোনও মূল্যই রইল না। বরং, এতে এন আর সি–র পালে আরও কিছুটা অক্সিজেন দেওয়া হল।
এনআরসি নিয়ে বিল আনার কোনও দরকার ছিল?
