সুমিত চক্রবর্তী
বাঙালি একবার দার্জিলিং গেলেই হল। পায়ে হেঁটে ঘোরার বদলে সে ঠিক গাড়িওয়ালার চক্করে পড়ে যাবে। দার্জিলিংয়ে ঢোকামাত্রই সে পরেরদিনের গাড়ির খোঁজে বেরিয়ে পড়বে। সকালে বেরিয়ে টাইগার হিল। তারপরেই ফাইভ পয়েন্ট বা সেভেন পয়েন্টের চক্করে পড়ে যাবে। যেগুলো পায়ে হেঁটে ঘোরা যায়, সেগুলো গাড়িতে চেপে ঘুরবে।
ম্যালের ঠিক নিচেই আছে চিত্তরঞ্জন দাশের সেই বাড়ি। যেখানে চিত্তরঞ্জন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। এই বাড়িতে কে আসেননি? গান্ধীজি থেকে নেহরু, নেতাজি থেকে ইন্দিরা গান্ধী। মাসে একজনও পর্যটক যান কিনা সন্দেহ। অন্তত কেয়ারটেকারের বয়ান ও ভিজিটর্স বুক তো সেই কথাই বলছে। ম্যাল থেকে হেঁটে দু মিনিটও লাগে না।
ম্যাল থেকে হেঁটে মিনিট পনেরোর দূরত্বে রয়েছে তেনজিং নোরগের বাড়ি। সবাই গিয়ে বাড়িতে উৎপাৎ করবেন, সেটা কাম্যও নয়। কিন্তু তেনজিংয়ের ছেলের কাছেই শুনেছি, বছরে এক দুজন ছাড়া কোনও বাঙালিই আসে না। গেলে যা তাঁরা খুব বিরক্ত হতেন, এমনও নয়। সেখানে তেনজিংয়ের নানা স্মারক, নানা ইতিহাস সাজানো। দেখার লোক নেই।
বাঙালি বোঝে সেই বাঁধা ধরা কয়েকটি জায়গা। গাড়িওয়ালার ঠিক করে দেওয়া জায়গা। এই বৃত্তের মধ্যেই ঘুরপাক খেতে ভালবাসে গড়পড়তা বাঙালি ট্যুরিস্ট। তাই টাইগার হিলে যান নিয়ন্ত্রণ শাপে বর হয়ে উঠতে পারে। অন্তত বাঙালি পায়ে হেঁটে যদি দার্জিলিংকে চিনতে শেখে!