মন্দির করা সরকারের কাজ!‌

‌বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন:‌ আবার তিনি নতুন চমক দিয়েছেন। এবার তাঁর ঘোষণা, দিঘায় তিনি জগন্নাথ মন্দির করে দেবেন। এবং, যেমন তেমন মন্দির নয়, একেবারে পুরীর মন্দিরের সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির।
সরকারের কোনটা কাজ, আর কোনটা কাজ নয়, সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর ধারনা বরাবরই একটু গোলমেলে। দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে সেই ধারাবাহিকতাই তিনি বজায় রাখলেন। মন্দির তৈরি করা কখনও সরকারের কাজ হতে পারে?‌ আসল কাজের কাজে হাজার মাইল পিছিয়ে। শুধু ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে সেই ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা!‌
একেক জায়গার একেক মাহাত্ম্য থাকে। সেই কারণেই দার্জিলিংয়ে চা–‌গাছ হয়।মেদিনীপুরে হয় না। বাঁকুড়ার গামছা দার্জিলিংয়ে হয় না। পুরীর জগন্নাথ মন্দির হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠেনি। তার সঙ্গে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, পরম্পরা জড়িয়ে আছে। তা জোর করে দিঘায় আনা যায় না। সুন্দরবনের বনবিবি উৎসব একান্তই তাঁদের নিজস্ব। জোর করে এটা কোচবিহারে করা যায়!‌ ঠিক তেমনি, কোচবিহারের রাস উৎসবের আলাদা মাহাত্ম্য। জোর করে তা সুন্দরবনে করা যায় না। জল্পেশ মন্দির জলপাইগুড়িতেই ভাল। ঠিক তেমনি নাচিন্দার মন্দির মেদিনীপুরে। সবকিছু কারও খামখেয়ালিপনায় চলতে পারে না।

jagannath mandir

এখানেই এই খামখেয়ালিপনা থামবে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। এবার কোনদিন হয়ত বলে বসবেন, বাংলা মানুষকে হজ করতে কেন মক্কায় যেতে হবে?‌ ফুরফুরা শরিফেই হজ হতে পারে। সারা দেশের লোক তাহলে এখানে আসবেন। এখানে পর্যটনের উন্নতি হবে। কোনদিন হয়ত বলবেন, আমি ভ্যাটিকান সিটি দেখে এসেছি। ওরা কৃষ্ণনগরে বা চন্দননগরে তৈরি করা যায়। করেও ফেলবেন।
গোটা ভোট প্রচার জুড়ে তিনি চণ্ডীপাঠ করে গেলেন। এবার তো পুজো আসছে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে মন্ত্র পড়বেন। আর ফিতে কেটে যাবেন। স্তাবক মিডিয়াও ধন্য ধন্য করে যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাজ শুধু পুজো উদ্বোধন করা নয়। যদি সত্যিকারের প্রশাসক হতে চান, তাহলে কারখানা তৈরি করুন। তার ফিতে কাটুন। গত আট বছরে এমন মুহূর্ত কবার এসেছে?‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.