স্মৃতিটুকু থাক
শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালার একটা রেওয়াজ প্রায় সব জায়গায় আছে। বিশেষ করে বাবা তারকনাথ ছবি রিলিজ করার পর এই প্রবণতা আরও বেড়েছে। অনেক জায়গায় এই জল ঢালার প্রথাকে ‘ভোলে বাবা’ বলা হয়।
বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জেলায় অনেকেই ছোটবেলায় ভোলেবাবা যেত। যত না ভক্তিতে, তার থেকে বেশি হুজুগে। ভোলেবাবা যাওয়া নিয়ে আমার একটি স্মৃতি আছে। নাম প্রকাশ হয়ে গেলে কিছুটা লজ্জায় পড়ব। তাই নিজের নাম গোপনই রাখছি। তবে ঘটনাটা বলা যেতেই পারে।
আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। শুশুনিয়ায় জল ভরে এক্তেশ্বরের মন্দিরে ঢালতে যাওয়ার কথা। শুশুনিয়া থেকে ফেরার পথে একসঙ্গে জনা দশেক বন্ধু। তখন ভোলেবাবা মানে, অনেক নিষিদ্ধ কৌতূহলের হাতছানি। অনেকের সিগারেট খাওয়ার হাতেখড়ি হয় এই ভোলেবাবাতেই। সেবার কয়েকজনের ইচ্ছে হল, একটু গঞ্জিকা (গাঁজা) সেবনের। গন্ধেশ্বরীর পাড়ে এসে কয়েকজন বসে পড়লাম। এক বন্ধুর অভ্যেস ছিল। সে দিব্যি টান মেরে গেল।
এবার আমার পালা। আমিও চোক বন্ধ করে কয়েক টান দিলাম। সাময়িক বিরতি। কয়েকজন বন্ধুর অনুরোধে আবার কয়েক টান। ব্যাস, নেশা ধরে গেল। গন্ধেশ্বরীর পাড় থেকে তখন আমাদের তোলে, কার সাধ্য! সেখানেই শুয়ে পড়লাম। আমার সঙ্গে বাকিরাও ঘুমিয়ে পড়ল। যখন ঘুম ভাঙল, তখন সূর্য উঠে গেছে। নিজেদের আবিস্কার করলাম নদীর পাড়ে। ওই অবস্থায় উঠে, বাঁক কাঁধে নিয়ে সবাই মিলে ছুটলাম বাঁকুড়ার পথে। জল ঢাললাম। মনে মনে বললাম, আমরা শিবের আদর্শ চ্যালা।
তারপরেও ভোলেবাবা গেছি। কিন্তু আর কখনও গঞ্জিকা চক্করে পড়িনি। তবে এখনও কাউকে ভোলেবাবা যেতে দেখলে গন্ধেশ্বরীর পাড়ে ঘুমিয়ে পড়ার দৃশ্যটা মনে পড়ে যায়।
বিদ্যুৎ মণ্ডল, শালবনি, বাঁকুড়া
(আপনিও লিখুন..
এই বিভাগ পাঠকদের মুক্তমঞ্চ। আপনিও এখানে মন খুলে নিজের কথা লিখতে পারেন। পুরানো কোনও স্মৃতির কথা তুলে আনতে পারেন। কারও কাছে নিজের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারেন। শৈশব, কৈশোরের টুকরো টুকরো স্মৃতি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। এমনকি কোনও ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হলে, তা এখানে লিখে মনকে কিছুটা হালকা করতে পারেন। চেষ্টা করুন, ১৫০-২০০ শব্দের মধ্যে নিজের অনুভূতিকে মেলে ধরতে। যাঁরা গুছিয়ে লিখতে পারেন না, তাঁরাও হীনমন্যতায় ভুগবেন না। আপনি আপনার মতো করে লিখে পাঠান। আমরা সাজিয়ে নেব। লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ bengaltimes.in@gmail.com)