রক্তিম মিত্র
ঝর্না দাস কে ? অনেকেই চেনেন না। চেনার কথাও নয়। সাংসদ হলেও তিনি সেলিব্রিটি নন। কিন্তু একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব কী, তা অন্তত অমিত শাহকে বুঝিয়ে এলেন ত্রিপুরার এই রাজ্যসভার সাংসদ।
ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত ভোট ২৭ জুলাই। মনোনয়ন পর্ব চুকে গেছে। ৮৬ শতাংশ আসনে বিরোধীরা কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি। কেন বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারলেন না, তা বাংলার মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে জানেন। শাসকের কী যুক্তি হয়, তাও অজানা নয়।
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন ঝর্না দাস। রাজ্য প্রশাসন, রাজ্য পুলিশ কী ন্যক্কারজনক ভূমিকা পালন করেছে, সেই ব্যাপারেই অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাঝে মাঝে ভুলেই যান তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আসলে, বিজেপি সভাপতি, এই তকমাটা কিছুতেই ভুলতে পারেন না। ঝর্না দাসকে বলেই ফেললেন, সিপিএম তো আর কিছু নেই। ওখানে থেকে কী হবে? আপনি বিজেপিতে চলে আসুন।
একজন দলীয় সভাপতি এমন কথা হয়ত বলতেই পারেন। কিন্তু সরকারি দপ্তরে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চেয়ারে বসে এমন কথা বলা যায়! দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ন্যূনতম কাণ্ডজ্ঞানটুকু থাকবে না? সেই দায়িত্বটাই মনে করিয়ে দিলেন ঝর্না দাস। জানিয়ে দিলেন, আমি বিজেপির সভাপতির কাছে আসিনি। আমি এসেছি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো কথা বলুন।
লাল সেলাম ঝর্না দাস। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁর দায়িত্বটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য। দল আর প্রশাসন যে আলাদা বিষয়, দুইয়ের মধ্যে যে একটা লক্ষ্মণরেখা থাকে, এই সহজ সহবৎ শিক্ষাটাই ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। কোনটা দলীয় সভায় বলতে হয়, কোনটা বিধানসভা বা সংসদে বলতে নেই, এই বোধগুলোই ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, এই ঝর্না দাসেরাই পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁর দায়িত্বটা ভাল করে বুঝিয়ে দিতে।