রক্তিম মিত্র
এই রাজ্য থেকে লোকসভায় বামেদের কোনও প্রতিনিধি নেই। রাজ্যসভাতেও নেই। বছর পাঁচেক আগে ঋতব্রত ব্যানার্জি রাজ্যসভায় গেলেও আপাতত তিনি বহিষ্কৃত। ফলে, কাগজে কলমে তিনিও বামপন্থী সাংসদ নন। সংসদের কোনও সভাতেই কি বামেদের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না?
বিধানসভায় বামেদের যা শক্তি, নিজেদের উদ্যোগে কাউকেই রাজ্যসভায় পাঠানো সম্ভব নয়। কংগ্রেসের সাহায্য নিতেই হবে। বছর দুই আগে সুযোগ ছিল সীতারাম ইয়েচুরিতে ফের রাজ্যসভায় পাঠানোর। ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় পাঠাতে কংগ্রেসের দিক থেকে কোনও আপত্তি ছিল না। কিন্তু বাম নেতৃত্ব শেষদিন পর্যন্ত নানা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলেন। কংগ্রেসের সমর্থনে কারও রাজ্যসভায় যাওয়া উচিত হবে কিনা, এই ছুৎমার্গ চলল কেন্দ্রীয় কমিটি, পলিটব্যুরোতেও। বাসটা মিস হয়ে গেল।
গত বছর ফের সুযোগ এসেছিল। সেবারও আগে থেকে বাম নেতৃত্ব যদি নাম চূড়ান্ত করতে পারতেন, সেবারও হয়ত কংগ্রেস সমর্থন দিত। কিন্তু এবারও নানা ঢিলেমি। আলোচনা চলল তো চললই। আর এই বিলম্বেরই সুযোগ নিলেন মমতা ব্যানার্জি। কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে অভিষেক মনু সিংভির নাম তৃণমূলের সভা থেকে ঘোষিত হল। কংগ্রেস হাইকমান্ডের সামনেও আর উপায় ছিল না। বামেরা সেই প্রার্থী দিলেন, একেবারে শেষবেলায়। তখন যা হওয়ার হয়ে গেছে। শেষমেষ প্রার্থীপদই বাতিল হয়ে গেল।
এবার অনেক আগে থেকেই এই আলোচনা শুরু হোক। কাকে প্রার্থী করা হবে, এখন থেকেই চূড়ান্ত করা হোক। বিকাশ ভট্টাচার্য বা মহম্মদ সেলিম যোগ্য প্রার্থী। তাঁদের নামে কংগ্রেসের দিক থেকে আপত্তি থাকবে বলে মনে হয় না। বিশেষ করে বিকাশবাবুর নামে আপত্তি থাকারই কথা নয়। এখন থেকেই হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা হোক। যদি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই লড়তে হয়, তাহলে তাঁদের সমর্থনে রাজ্যসভায় পাঠাতে এত দ্বিধা কেন? সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে এখন থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হোক। নইলে, আবার বাস মিস হয়ে যাবে।