সারি সারি তারা নেমে আসে পায়ের নিচে

বর্ষায় অনেকে পাহাড়কে এড়িয়ে যান। কিন্তু পাহাড়ে অলসভাবে বৃষ্টি দেখার আনন্দই আলাদা। এমনই এক ঠিকানা হতে পারে বড়া মাঙ্গোয়া। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো এক ফার্মহাউস। সামনে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের সারি। বৃষ্টিভেজা পাহাড় ধরা দেবে আরও মোহময়ী চেহারায়। লিখেছেন অভিরূপ দাস।

পাহাড়ে বর্ষা বড় অদ্ভুত। বড় রহস্যময়। এই রোদ ঝলমলে। একটু পরেই ঝমঝম করে বৃষ্টি নেমে যেতে পারে। এভাবেই ঘুরতে গিয়ে কতবার ভিজেছি। আবার উল্টোটাও হয়েছে। বৃষ্টি পড়তে পারে, এই ভেবে ঘরের মধ্যে বন্দী থেকেছি, কোত্থাও বেরোইনি। দেখা গেল, বৃষ্টিই হল না। শুধু শুধু হোটেলবন্দী হয়ে দিনটা নষ্ট হয়েছে।

বর্ষায় অনেকেই এড়িয়ে চলতে চান পাহাড়কে। কিন্তু পাহাড়ে বৃষ্টি দেখার একটা আলাদা রোমাঞ্চ আছে। কোথাও ঘোরার দরকার নেই। শুধু ছাদ বা ব্যালকনিতে বসে বৃষ্টি দেখুন। এমন একটা জায়গার হদিশ দেওয়া যাক। বড়া মাঙ্গোয়া। পর্যটন মানচিত্রে খুব পরিচিত নাম নয়। কেউ কেউ হয়ত নাম শুনেছেন। অনেকের হয়ত ভালও লাগেনি। ফলে, ফিরে এসে অন্যকে যেতে উৎসাহিত করেননি। আমার কিন্তু জায়গাটা ভালই লেগেছিল। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, যেখানে ছিলাম, সেই বাড়িটা।

bara mangwa1

এটাকে ঠিক হোটেল বলা যাবে না। আবার হোম স্টেও বলা যাবে না। কর্পোরেট ব্যাপার যেমন নেই, তেমনি গ্রাম্য ব্যাপারও নেই। বরং, একে ফার্ম হাউস বলতে পারেন। একান্ত অবসরে দুটো দিন কাটানোর দারুণ একটা জায়গা। দুখানা ঘর। জানলা থেকেই ধরা দেবে প্রকৃতি। সামনেই খোলা বারান্দা। সেখানে চেয়ার নিয়ে বসে পড়ুন। সকাল হোক বা দুপুর, বিকেল হোক বা রাত, সবসময়ই যেন অসাধারণ অনুভূতি। সামনে শুধু পাহাড়ের সারি। নাম না জানা সব জনপদ। সন্ধে নেমে আসছে। শহরের সব ক্লান্তি, সব অবসাদ যেন নিমেশে দূর হয়ে যায়। মনে হবে, একেবারেই অন্য এক জগতে চলে এসেছেন। অচেনা সেই সব জনপদে একটু একটু করে জ্বলে উঠছে আলো। মনে হবে, আপনার পায়ের তলায় যেন হাজার হাজার তারা নেমে এসেছে।

খুব যত্ন নিয়ে সাজানো হয়েছে এই বাগানবাড়িকে। একটু উপরে উঠে খাওয়ার জায়গা। সামনে সেই দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের সারি। এই সময় ডায়টেসিয়ানের সব নিষেধাজ্ঞা ভুলে যান। এমন সুস্বাদু খাবার থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখার কোনও মানেই হয় না। চাইলে আশপাশটা ঘুরে দেখতেই পারেন। কিন্তু এই বর্ষায় ভরসা কোথায়? বৃষ্টি নামতেই পারে। নামলে নামুক। ওই বারান্দায় বসে কোনও পছন্দের বইয়ে মন দিতে পারেন। বই পড়ায় খুব অ্যালার্জি ? তাহলে মোবাইলেই চোখ রাখুন। পছন্দের গান চালিয়ে দিন। জায়গাটা এতটাই সুন্দর, অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছেও করবে না।

কীভাবে যাবেন? কালিম্পং যাওয়ার পথেই পড়বে। তিস্তাবাজার পেরিয়ে আরও মিনিট পনেরো। শিলিগুড়ি থেকে মোটামুটি ঘণ্টা দুই। পুজো পর্যন্ত অপেক্ষার দরকার নেই। বর্ষার মাঝেই বেরিয়ে পড়ুন। আগাম বুকিং করতে চাইলে ৯৪৩৪৮ ৭২৫২০ নম্বরে একটু কথা বলে নিতে পারেন।

(বেঙ্গল টাইমসে বেড়ানোর সুলুক সন্ধান। কাছে পিঠেই দারুণ দারুণ ঠিকানা। বেরিয়ে পড়ুন। চাইলে, আপনিও কোনও অচেনা ঠিকানার হদিশ দিতে পারেন। লেখা পাঠান বেঙ্গল টাইমসের ঠিকানায়। bengaltimes.in@gmail.com)

 

bt-bannerhttps://www.bengaltimes.in/amazing-pattaya/

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.