‌মুখ্যমন্ত্রীর গাড়িতে এইসব অর্বাচীনরা কেন?‌

বেঙ্গল টাইমস প্রতিবেদন:‌ হঠাৎ করে হাসপাতালে ঢুকে পড়াটা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নতুন কিছু নয়। শপথ নেওয়ার পর থেকেই হঠাৎ হানাদারি শুরু হয়েছে। বাড়ি থেকে নবান্ন যাওয়ার পথে এসএসকেএম পড়ে। তিনি সেখানে ঢুকে গেলেন। কিন্তু বিক্ষোক্ষের আসল উৎস তো এন আর এস। সেখানে ডাক্তার নিগ্রহ হয়েছে। সেখানে আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেই রেশ অন্যান্য হাসপাতালে ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলন থামাতে গেলে তো আগে এন আর এসে যেতে হবে। সেখানে না গিয়ে এস এস কে এমে কেন?‌

nirmal maji2
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ওঁরা কেন?‌ দেখা গেল নির্মল মাজিকে। দেখা গেল সল্টলেকের কাউন্সিলর কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে যেতেই পারেন। কিন্তু সঙ্গে এই দুজনকে নিয়ে যাওয়া কি খুব জরুরি ছিল?‌ গত সাত–‌আট বছরে চিকিৎসা জগতে সবথেকে নিন্দনীয় ব্যক্তিটির নাম নির্মল মাজি। প্রায় প্রতিটি বড় বড় হাসপাতালে এমন এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন, অধিকাংশ চিকিৎসক রীতিমতো বিরক্ত। চিকিৎসক মহলে সরকারের যা দুর্নাম, তার অনেক কিছুর জন্য এই লোকটিই দায়ী। যে কোনও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন, তাহলেই জানতে পারবেন। কীভাবে তিনি খবরদারি চালান, কীভাবে সুপার থেকে সিনিয়র ডাক্তারদের অপমান করেন, কীভাবে পেটোয়া বাহিনী তৈরি করেছেন, অধিকাংশ কথাই গণমাধ্যমে আসে না। কিন্তু যেটুকু আসে, তা যোগ করলেই তো আস্ত মহাভারত দাঁড়িয়ে যাবে। কে তাঁকে এই অধিকার দিয়েছে?‌ সবাই জানে, স্বাস্থ্যভবন কার্যত তাঁর কথায় চলে। পোস্টিং থেকে পদোন্নতি, বদলি থেকে শাস্তি, অনেককিছুই হয় তাঁর হুকুমে। এরপরেও তাঁর রাশ টানা হচ্ছে না কেন?‌
তৃণমূলের এই চিকিৎসক নেতা বহু বছর ধরেই তীব্র প্রচারলোভী। সামান্য এক লাইন নাম ছাপানোর জন্য তিনি অতীতে কী কী হাস্যকর কাণ্ড করেছেন, তা যে কোনও সাংবাদিকই জানেন। সব জায়গায় বলে বেড়ান, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। তাই কেউ তাঁকে ঘাঁটানোর সাহস করেন না। এবারও সবাই দেখলেন, মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির পেছন থেকে তিনি নেমে এলেন। ব্যাস, এটাকে ভাঙিয়েই তিনি আরও খবরদারি চালিয়ে যাওয়ার লাইসেন্স পেয়ে গেলেন। এই লোককে গাড়িতে নিয়ে ঘুরলে তাঁর গুন্ডামিকেই সিলমোহর দেওয়া হয়। তিনি চিকিৎসক সংগঠনের কর্তা। তাঁর কাজ হল চিকিৎসকদের দাবি দাওয়া নিয়ে সোচ্চার হওয়া। তার বদলে তিনি কিনা দালালি করছেন হামলাকারিদের হয়ে। এমন লোক চিকিৎসকদের সংগঠনের কর্তা হন কীভাবে?‌
যদি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফেরাতে হয়, সবার আগে এই লোকগুলিকে হাসপাতাল থেকে দূরে রাখতে হবে। সরকারের দশটা ভাল কাজকে পণ্ড করে দেওয়ার জন্য এই জাতীয় এক দুটো লোকই যথেষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যিই স্বাস্থ্য বিভাগের হাল ফেরাতে চান, এই দুর্বৃত্তদের চোখ দিয়ে দেখা বন্ধ করুন। একটু খোঁজ নিলেই এই লোকটির হাজার খানেক অপকর্মের কথা জানতে পারবেন। তার পরেও যদি এই লোকটিকেই ভরসা করতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে, হাসপাতালের হাল ফেরানোর কোনও সদিচ্ছাই আপনার নেই।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.