জঙ্গল মহলের ফাঁপা বেলুনও চুপসে গেল

সৌরভ সরকার
পাহাড় যেমন শিক্ষা দিল, একইরকম শিক্ষা দিল জঙ্গল মহলও। এই জঙ্গল মহল নিয়েও শাসকের অহঙ্কারের শেষ ছিল না। সেখানে যে এমন ভরাডুবি হবে, অনেকেই ভাবতে পারেননি।
পুরুলিয়া আসন যে এবার হাতছাড়া হচ্ছে, তা মোটামুটি জানাই ছিল। পঞ্চায়েতে বিজেপি সেখানে ভাল ফল করেছিল। কিন্তু তারপর থেকে তৃণমূল যে অত্যাচার শুরু করেছিল, মানুষের মনে ঘৃণা ক্রমশ বাড়ছিল। কোনও এক ভাইপো হুঙ্কার দিলেন, আমি কালকেই পুরুলিয়া যাচ্ছি, তারপর বিরোধীশূন্য করে আসব। মানে কী?‌ যাঁরা জিতলেন, তাঁরাও বিরোধী থাকতে পারবেন না?‌ দেখা গেল, পর পর দুই কর্মীকে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হল। একে একে বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হল। কীভাবে এই দলবদল হয়েছে, কারও অজানা নয়। এসব যে মানুষের ঘৃণা বাড়ায়, এসব বোঝার মতো বুদ্ধি সেই ভাইপোর হয়নি।

vote8
বাঁকুড়া। এখানেও তিনটি বিধানসভা রয়েছে জঙ্গল মহলে। এখানেও সেই পঞ্চায়েত ভোট না করানোর মাশুল দিতে হল। জেলা পরিষদের কোনও আসনেই বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতেও তাই। লাঠি নিয়ে ব্লকে ব্লকে দাঁড়িয়েছিল উন্নয়ন। এর মাশুল দিতে হল সুব্রত মুখার্জিকে। তাই বলে দেড় লাখের বেশি ভোটে হার!‌ হ্যাঁ, এতটাই ঘৃণা অর্জন করেছে তৃণমূল। বিষ্ণুপুরে যে তৃণমূল হারবে, কেউ ভেবেছিলেন?‌ বিজেপি প্রার্থীকে ঢুকতেই দেওয়া হল না। একের পর এক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হল। কিন্তু এরপরেও হারতে হল। ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরেও হারতে হল শাসকদলকে। এখানে কখনও ভোট না করিয়ে, কখনও পুলিশ দিয়ে দমনের চেষ্টা হয়েছিল। তার মাশুল দিতে হল। তৃণমূল বিরোধী ভোট পড়ল মূলত বিজেপির বাক্সে। পাহাড়ের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গল মহলের উন্নয়নের ঢাকও কম বাজানো হয়নি। সেই বেলুনটাও চুপসে গেল।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.