ওই সাড়ে তিনশো বুথের আলাদ হিসেব হোক

উত্তম জানা

ডায়মন্ড হারবার নিয়ে সবাই কেমন নিশ্চুপ। টিভিতে ভোট নিয়ে দিনভর আলোচনা। অথচ, ডায়মন্ড হারবারের প্রত্যন্ত এলাকায় কীভাবে ভোট হচ্ছে, সেই ছবিটা একেবারি উঠে এল না। অথচ, বিরোধীদের অভিযোগ, সবথেকে বেশি ছাপ্পা হয়েছে এই ডায়মন্ড হারবারেই।

৩৫৭ টি বুথ নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ। একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে। তাঁরা যে কিছুই করবেন না, সে জানা কথা। এসব কারণেই এই সংস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাস আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। বলা হয়েছিল, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। জনৈক ভাইপোর নির্বাচনী কেন্দ্র বলে কথা। ফলে, অনেক জায়গাতেই বাহিনীর দেখা মিলল না। যেখানে ছিল, সেখানেও তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন। অভিযোগ জানাতে গেলে শুনতে হয়েছে, বুথের ভেতর কী হচ্ছে, আমাদের দেখা কাজ নয়।

vote8

সাড়ে তিনশোর ওপর বুথ নিয়ে স্পষ্ট অভিযোগ। কোন কোন বুথ, সেই তালিকাও দিয়েছেন বাম প্রার্থী। এখন নির্বাচন কমিশন কিছুই করবে না। কিন্তু নিশ্চিত থাকতে পারেন, ওই সাড়ে তিনশো বুথে অস্বাভাবিক ফল বেরোবে। দেখা যাবে, ভাইপো কোথাও আশি শতাংশ, কোথাও নব্বই শতাংশ ভোট পেয়েছেন। বিরোধীরা কোথাও একটি, কোথাও দশটি ভোট পাবে। অথচ, যেসব জায়গায় ভোট হয়েছে, সেসব জায়গায় অন্য ছবি। সেখানে হয়ত ভাইপো পিছিয়েও থাকতে পারেন। যেসব এলাকায় অভিযোগ নেই, সেখানে হয়ত কুড়ি শতাংশ ভোট, আর যেসব জায়গায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, সেসব বুথে আশি শতাংশ ভোট। সেক্ষেত্রে কী হবে?‌ এইসব বুথের তালিকা, অভিযোগের কপি এবং ওইসব বুথে ভোটের হিসেব নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না?‌

যেটুকু মানুষের মনোভাব বুঝেছি, তাতে ডায়মন্ড হারবারে ঠিকঠাক ভোট হলে ভাইপোর পরাজয় নিশ্চিত। এটা পিসিমণিও বুঝেছিলেন। সেই কারণেই, ভাইপোকে রাজ্যসভায় যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারপরেও ভাইপো ডায়মন্ড হারবারেই দাঁড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু মানুষ ভোট দিলে ফল কী হতে পারে, রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর অজানা নয়। তাই প্রশাসনকে যতটা নোঙরাভাবে ব্যবহার করা যায়, তাই করা হয়েছে। দলের নেতা–‌কর্মীদের ওপর ভরসা না রেখে অন্য জেলা থেকে লোক ভাড়া করে আনতে হয়েছে। কোন কোন বুথে বাহিনী থাকবে না, সেই তালিকা প্রশাসন মারফত আগাম পৌঁছে গেছে লেঠেল বাহিনীর হাতে। অঙ্ক কষেই লুঠ চালানো হয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ে কোনও চ্যানেলে উচ্চবাচ্য পাবেন না। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়া সত্ত্বেও ওই কেন্দ্রের কোনও বুথেই রিপোলিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। বোঝাই যায়, শিকড় কতটা গভীরে।

ওই সানে তিনশো বুথ বাদ দিলে বাকি বুথের হিসেবে ভাইপো হয়ত পিছিয়েই থাকবেন। তাই ওই সাড়ে তিনশো বুথের তথ্য যেন আলাদা করে সামনে আনা হয়।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.