দিব্যেন্দু দে
পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে সত্যিই মেলানো যায় না। এত শুনশান ভোট! চা বলয়ে সত্যিই অনেকটা উৎসবের মেজাজেই ভোট হল।
শাসক দল এটা বলবে, স্বাভাবিক। মিডিয়াও হয়ত এমনটাই বলবে। নির্বাচন কমিশনও তাই বলবে। কিন্তু এর বাইরেও তো আলাদা একটা পর্যবেক্ষণ আছে। সেই পর্যবেক্ষণও একই কথা বলছে। বিরোধীদের দিক থেকেও তেমন বড়সড় অভিযোগ নেই। অর্থাৎ, ধরে নেওয়াই যায়, আলিপুরদুয়ার লোকসভায় মোটামুটি নির্বিঘ্নেই ভোট হয়েছে।
এই এলাকায় পঞ্চায়েতের সময় তৃণমূল কীভাবে ভোট করিয়েছিল, অনেকেরই মনে আছে। অধিকাংশ আসনেই মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। মনোনয়ন দিলেও প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। ভোটের দিনেও চলেছে চূড়ান্ত ছাপ্পা সংস্কৃতি। বিরোধীরা যেখানে যেখানে জিতেছিল, কার্যত ঘাড় ধরে শাসক দলে যোগ দেওয়ানো হয়েছে। তারপরেও মাঝে মাঝেই চলেছে দল ভাঙানোর খেলা। মিডিয়ার প্রচারে মনেই হয়নি এখানে অন্য কোনও দল আছে।
সেই আলিপুরদুয়ারে এত শান্তিতে ভোট! অধিকাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না। তৃণমূলের সদিচ্ছা নাকি জেলা প্রশাসনের তৎপরতা, জানি না। তবে, এই আসনে যদি তৃণমূল জেতে, তাহলে সেই জয় মেনে নিতেই হবে। ফল কী হতে পারে? ভোটের হিসেবে অবশ্যই অনেক এগিয়ে তৃণমূল। পঞ্চায়েতের কথা ছেড়েই দিন। এমনকী বিধানসভা ভোটের নিরিখেও অনেকটাই এগিয়ে। তারপরেও এই কেন্দ্রে ফল বদলে যেতে পারে? হ্যাঁ, সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রথমত, পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল একেবারেই পরীক্ষা না দিয়ে পাশ করেছে। টোকাটুকিতে ছাত্রের মেধা বোধা যায় না। দ্বিতীয়ত, বামের ভোট কতটা বামেদের অনুকূলে পড়েছে, সন্দেহ আছে। নিচুতলায় অনেক তৃণমূল–বিরোধী ভোট হয়ত বিজেপির বাক্সে পড়েছে। তৃতীয়ত, নিচের তলায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধের সংখ্যাটা কম নয়। সেই ভোট কোথায় আর যাবে? চতুর্থত, যাঁরা কোনও দলেরই নয়, বলতে পারেন ভাসমান ভোটার, সেই ভোটের বেশিরভাগ জমা হতে পারে বিজেপির দিকেই।
সবমিলিয়ে নানা অঙ্ক, চোরাস্রোতে এগিয়ে বিজেপি। ২৩ মে আসল ছবিটা বোঝা যাবে। তবে, পাশাপাশি একথাও স্বীকার করতেই হবে, এই ভোটে যদি তৃণমূল জিতে যায়, তাহলে তাদের অভিনন্দন জানাতে কুণ্ঠা থাকাও উচিত নয়।
(বিভিন্ন কেন্দ্র নিয়ে খোলামেলা আলোচনা। আপনারাও মতামত দিতে পারেন ওপেন ফোরামে। মতামতের দায়িত্ব সম্পূর্ণই লেখকের। ভোটের আগেও এরকম সমীক্ষা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে পারেন। ভোটের পরেও পর্যালোচনা হতে পারে। সবমিলিয়ে ওপেন ফোরাম হয়ে উঠুক পাঠকের মুক্তমঞ্চ। )
লেখা পাঠানোর ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com