শান্তনু দাম
কুকথার বিরাম নেই। প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী, কেউই যেন পিছিয়ে নেই। আসলে, নিজেদের পদের মর্যাদা না বুঝলে যা হয়! প্রতিদিন নিয়ম করে নিজেদের পদকে কলঙ্কিত করছেন প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েক মাইল এগিয়ে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ভাবতেও অবাক লাগে, একজন মুখ্যমন্ত্রী দিনের পর দিন এভাবে নোঙরামো করতে পারেন! দিনের পর দিন এভাবে মিথ্যের বেসাতি করতে পারেন! এই ভাষা একজন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে রোজ বেরিয়ে আসে! জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের মুখে এই ভাষা কখনও স্বপ্নেও ভাবতে পারেন! বামপন্থীদের কথা ছেড়ে দিন, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, প্রফুল্ল সেনরা কখনও এই ভাষায় কথা বলেছেন?
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক লড়াই থাকতেই পারে। নানা রাজনৈতিক আক্রমণ করতেই পারেন। নিজের সরকারের সাফল্য তুলে ধরতেই পারেন। কেন্দ্রের ব্যর্থতাও তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু একেবারে নিম্নস্তরের কুরুচিকর আক্রমণ করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি একবারও ভেবে দেখছেন না, এই আক্রমণ তাঁর দিকেও ধেয়ে আসতে পারে।
কখনও বলছেন, ঢুকিয়ে দেব। যাঁরা ভাষণটা শুনেছেন, তাঁরা জানেন কী ইঙ্গিত করতে চাইছেন। কখনও বলছেন, তুমি সংসারের কী বোঝো? নিজের বউকে দেখেছো? নিজের বউয়ের খোঁজ রেখেছো? এসবের সঙ্গে নির্বাচনের তেমন সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না। এসব আক্রমণ করাটা অবশ্যই নিম্নরুচির কাজ। মোদি তো তবু বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন, কিন্তু কেউ কেউ তো স্বীকার করতেও চান না।
মোদির বিবাহ নিয়ে চায়ের দোকানে তর্ক হতেই পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় টিপ্পনিও হতে পারে। তাই বলে, একজন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সভা থেকে এভাবে আক্রমণ করবেন? একই প্রশ্ন তো তাঁর দিকেও ধেয়ে আসতে পারে। সে কথা কি তিনি একবারও ভেবে দেখেননি? যদি বিজেপির কোনও অত্যুৎসাহী নেতাকর্মী সংযম হারিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে বসেন, তখন তাঁর বাড়িতে হয়ত পুলিশ যাবে। তখন বলা হবে, কুরুচিকর পোস্ট। কিন্তু স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যে এভাবে কুরুচিককর প্রচার করে চলেছেন, তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না।
তাঁর কলতলার ঝগড়া, তাঁর কুরুচিকর প্রচার হয়ে দাঁড়ায় প্রতিবাদ। অন্যের নায্য প্রশ্ন হয়ে ওঠে কুৎসা। এটাই এখন এই রাজ্যের দস্তুর।
(ওপেন ফোরাম। পাঠকের মুক্ত মঞ্চ। নানা বিষয় নিয়ে মতামত দেওয়া যায়। মতামতের দায়িত্ব সম্পূর্ণ লেখকের। পাল্টা প্রশ্ন তোলা যায়। তবে রুচি ও শালীনতা বজায় রেখে। )