অশোক দত্ত
সমীক্ষায় বামফ্রন্টকে সেভাবে গুরুত্বই দেওয়া হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, তারা একটি আসনও পাবে না। মিডিয়াতেও মোটামুটি এটাই সুর। মানুষের মধ্যে গেঁথে ফেলা হচ্ছে এই ধারনাটা।
তাহলে বাম প্রার্থীদের ওপর এভাবে আক্রমণ হচ্ছে কেন? আসানসোলে আক্রান্ত হলেন প্রার্থী গৌরাঙ্গ চ্যাটার্জি। ডায়মন্ড হারবারে আক্রান্ত ফুয়াদ হালিম। এমন নয় যে সেখানে কোনও উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। একেবারে বিনা প্ররোচনায় হামলা। নির্মমভাবে আঘাত করা হল দুই প্রার্থীকে। সঙ্গে আক্রান্ত হলেন দলীয় নেতা–কর্মীরাও।
বামফ্রন্টকে নিয়ে যখন কোনও দুশ্চিন্তাই নেই, তখন তাদের প্রার্থীদের ওপর এভাবে হামলা করতে হচ্ছে কেন? সব ঘটনার পর দায় অস্বীকার করাটা একটা বিকৃত অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে। যেমন পুলিশের অভ্যেস হয়ে গেছে ব্যবস্থা না নেওয়ার। যেমন মিডিয়ার অভ্যেস হয়ে গেছে এসব খবরকে তেমন গুরুত্ব না দেওয়ার।
এক তৃণমূল নেতা তো বলে ফেললেন, এটা সিপিএমের গোষ্ঠীকোন্দল। শুনেও ভাল লাগল। এই দলটায় গোষ্ঠীকোন্দল হয়। তার মানে দলটা তাহলে এখনও আছে! এই হামলায় কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? একদিন পেরিয়ে গেলেও এমন কোনও খবর নেই। নেওয়া হবেও না। ফুয়াদ হালিম যেখানে আক্রান্ত হলেন, সেটা যেন কার এলাকা? সেই তমোনাশ ঘোষের বিশেষ কোনও পরিচিতি আছে? যাঁরা জানেন, তাঁরা জানেন।
আসলে, ভাইপোর জেতা সত্যিই মুশকিল। সোনা কান্ডের পরে তো আরও মুশকিল। বুথ দখল, ছাপ্পা না হলে, প্রশাসনকে নগ্নভাবে ভোটে ব্যবহার না করলে ভাইপোর জেতা প্রায় অসম্ভব। মিডিয়া যতই বিজেপির হাওয়া তুলুক, আসল হাওয়াটা কোনদিকে, সেটা ভাইপো নিজে বিলক্ষণ জানেন। তাই আক্রমণ যখন হয়, উদ্দেশ্য বুঝে নিতে অসুবিধে হয় না। কাস্টমসের সঙ্গে সেটিং করা যায়, হাইকোর্টে স্থগিতাদেশও পাওয়া যায়। ডিএম, এসপি–কে চাকর বাকর বানিয়ে ফেলা যায়। কিন্তু এসব করতে গিয়ে জনতার মন থেকে অনিবার্যভাবেই দূরে চলে যেতে হয়।
আসলে, ভাইপোর বাহিনী জানে, পিসির বাহিনী (মানে, পুলিশ) কিছু করতে পারবে না। সেই কারণেই তারা এতটা বেপরোয়া। হয়ত সেই কারণে মরিয়া। ধন্যবাদ সেই বাইক বাহিনীকে। ধন্যবাদ সেই হামলা কারীদের। তাঁরা অন্তত আসল প্রতিপক্ষ চিনিয়ে দিলেন।