পলাতক গুরুংকেও এত ভয়!‌

অনিমেষ চৌধুরি

বিমল গুরুংকে আটকানোর কী মরিয়া চেষ্টা!‌ সকাল থেকেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। নামলেই নাকি তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে। ওদিকে, পাহাড়ে লেলিয়ে দেওয়া হল আরেক বাহিনীকে। গুরুং পাহাড়ে উঠতে চাইলে তাঁরা নাকি কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাবেন। আরেক বাহিনীকে পাঠানো হল জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চে। গুরুং যেন কোনওভাবেই জামিন না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

যে মানুষটা দেড় বছর ধরে পাহাড়ে নেই, এমনকী রাজ্যেও নেই, তাঁকে আটকানোর এমন মরিয়া চেষ্টা?‌ যেসব মামলা বিমল গুরুংয়ের নামে আছে, সেই একই মামলা দেওয়া হয়েছিল বিনয় তামাংয়ের নামেও। অথচ, যেই দিদিমণির কাছে নতজানু হলেন, অমনি তিনি হয়ে গেলেন সরকারের খাস লোক। নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাঁকে বানিয়ে দেওয়া হল জিটিএ–‌র প্রধান। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও আরও দুবার মেয়ার বাড়িয়ে দেওয়া হল। অর্থাৎ, নেত্রীর কথায় তাল মেলালেই সব মামলা থেকে অব্যবহতি।

bimal gurung

গত দেড় বছর ধরে প্রচার চালানো হচ্ছে, পাহাড়ে গুরুংয়ের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। মোর্চার পুরোটাই নাকি বিনয় তামাংদের হাতে চলে এসেছে। পাহাড়ের মানুষ নাকি বিনয় তামাংদের সঙ্গে। তাহলে, গুরুংকে এত ভয় কেন?‌ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, আগামী চারদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। তারপরেও বিমান বন্দরে এত পুলিশের মোতায়েন কেন?‌ এটা কি সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা নয়?‌ আদালতে জামিন আটকাতে এত তৎপরতা কেন?‌

আসলে, সরকার যখন অহেতুক ভয় পেতে শুরু করে, তখন এরকমই হয়। সুতোকেই সে সাপ ভেবে বসে। প্রশাসন ও পুলিশের হয়েছে সেই দশা। বোঝাই যাচ্ছে, পাহাড়বাসীর ওপর গুরুংয়ের প্রভাব এখনও যথেষ্টই। বিনয় তামাং সাজানো পুতুল ছাড়া আর কিছুই নয়। গত দেড় বছরে না বিজেপি, না গুরুং বাহিনী, কেউই বড়সড় কোনও মিটিং করতে পারেনি। তারপরেও যদি তারা জিতে যায়, সেটা সত্যিই সরকারের লজ্জা। আরও একটা মোক্ষম থাপ্পড় হয়ত অপেক্ষা করছে। পাহাড় হাসছে বলে যতই প্রচারের ঢক্কা নিনাদ থাকুক, সেই পাহাড় যে গর্জে উঠতেও জানে, সেই পাহাড় যে নির্লজ্জ তাঁবেদারদের সঙ্গে থাকে না, ২৩ মে হয়ত এমন বার্তা উঠে আসতে পারে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.