চট করে চটকপুরে

দেবাঞ্জন চক্রবর্তী

একে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা। তার ওপর ভোর রাত থেকে উঠে পড়া। হোটেলের বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ডেস্টিনেশন টাইগার হিল।

সেখানে গিয়েও কি রেহাই আছে!‌ যেখানে গাড়ি থামল, সেখান থেকে খাড়া পথে হেঁটে অনেকটা পথ। যেন সুরুচি সঙ্ঘের পুজোর ভীড়। ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি। ভোর বেলায় পিলপিল করে এত লোক কোত্থেকে যে আসে!‌

chatakpur

এত কান্ড করেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার নিশ্চয়তা নেই। ফিরে আসা, সে আরেক ঝামেলা। এসব যদি এড়াতে চান, চলে আসুন চটকপুরে। টাইগার হিল থেকে যেমন সূর্যোদয় বা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবেন, এখান থেকেও তেমনই দেখবেন। তবে ওই ভিড়, ট্রাফিক জ্যামের চক্করে পড়তে হবে না। একেবারে নিরিবিলিতে একটা সুন্দর সকাল আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।

যাওয়া–‌আসার তেমন ঝামেলা নেই। দার্জিলিং যেমন, এটাও তেমনই। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। যাওয়ার অনেকগুলো রাস্তা আছে। থাকারও বেশ কয়েকটা ঠিকানা আছে। সরকারি বাংলোতেও থাকতে পারেন। আবার হোম স্টে–‌তেও থাকতে পারেন।

যাওয়ার পথটা অসাধারণ। দুপাশে ঘন জঙ্গল। চোখের সামনে মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে। তার মাঝ দিয়ে আপনার গাড়ি এগিয়ে চলেছে। একটা ছবির মতো সুন্দর গ্রাম। সবমিলিয়ে বড়জোর একশো পরিবারের বাস। নিরিবিলি, শুনশান একটা পাহাড়ি গ্রাম। নাম না জানা কত পাখির ডাক, কত অচেনা গাছের মিছিল। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেয় নানা চেহারায়। মাঝে মাঝেই পাল্টে যায় আকাশের রঙ। এত রহস্য, এত রোমাঞ্চ, আপনাকে দু–‌দণ্ড শান্তি দিয়ে যাবে।

chatakpur3

ইচ্ছে মতো বেরিয়ে পড়ুন জঙ্গলে। তেমন হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই। যদি মনে হয়, কাউকে সঙ্গে চাই, হোম স্টে–‌তে বললেই হবে। গাইড ঠিক রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে যাবে। ছোট খাটো একটা ট্রেকিং হয়ে যেতে পারে। যেখানে ধকল তেমন নেই, কিন্তু রোমাঞ্চ আগাগোড়াই আছে।

বর্ষার সময়টা এড়িয়ে চলাই ভাল। জুলাই, আগস্ট বাদ দিলে বাকি দশ মাস তো পড়েই রইল। খামোখা দার্জিলিংয়ের ট্রাফিক জ্যাম বাড়িয়ে লাভ কী?‌ আপনার ঠিকানা হয়ে উঠুক এই সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.