নির্মল দত্ত
কেন দল ছাড়লেন? কেন নতুন দলে এলেন? এসব প্রশ্ন এখন আর করতে হয় না। যিনি দলবদল করেন, তিনি জানেন কী কী প্রশ্ন আসতে পারে। মুখস্থ করেই আসেন। কেউ তৃণমূলে যোগ দিলে উত্তরটা কী হবে, মুকুল রায় একসময় পাখি পড়া করে শিখিয়ে দিতেন— মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে রাজ্যজুড়ে যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে, তাতে সামিল হতেই তৃণমূলে যোগ দিলাম।
কিন্তু কেউ বিজেপিতে যোগ দিলে? অর্জুন সিং শোনালেন, পুলওয়ামা কান্ডের পর নেত্রীর প্রতিক্রিয়া নাকি তাঁর ভাল লাগেনি। সেই কারণেই তিনি নাকি বিজেপিতে যোগ দিলেন।
একেবারেই হজম হল না। সহজ কথাটা সহজভাবে বললেই পারতেন। সেটা অন্তত বিশ্বাসযোগ্য হত। সহজ কথা, অর্জুন সিং এবার ব্যারাকপুর থেকে লোকসভায় দাঁড়াতে চাইছিলেন। দীনেশ ত্রিবেদীকে আর যেন টিকিট না দেওয়া হয়, সেটা জোর গলায় বলে আসছিলেন। নেত্রীর কাছেও বলেছিলেন, মিডিয়ার কাছেও গোপন রাখেননি। ধরা যাক, তাঁর দাবি মনে নেত্রী তাঁকে ব্যারাকপুরে প্রার্থী করলেন। তাহলে কী হত? তখন কি তিনি বলতেন, পুলওয়ামা কাণ্ডে নেত্রীর অবস্থান ভাল লাগেনি? তখন তো তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়ে তিনিও মোদিকে গালা পেড়ে যেতেন। তখন তো তিনিও উন্নয়নের ফিরিস্তি শোনাতেন।
সহজ কথা, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে এসেছেন। বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, তাঁর ওজন কতটা। এই সহজ কথাটা সহজভাবে বললে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য হত। তার জায়গায় তিনি অহেতুক দেশপ্রেমের ইস্যু সামনে আনতে চাইছেন। কোনও সন্দেহ নেই, অর্জুন প্রভাবশালী। এলাকায় যথেষ্ট দাপট আছে। নানা অঙ্কে শেষমেষ হয়ত জিতেও যেতে পারেন। তাই বলে তাঁর কাছ থেকে দেশপ্রেমের ভাষণ কে শুনতে চায়! তাঁর কাছে নীতিকথা কে শুনতে চায়! এতে বোধ হয় নিজেকেই অহেতুক খাটো করলেন অর্জুন।