ব্রিগেড কাঁপাতে ভরসা থাকুক নতুন মুখে

সরল বিশ্বাস

একটা ব্রিগেডের পর আরেক ব্রিগেডের তোড়জোড়। তৃণমূলের ব্রিগেড আমরা সবাই দেখেছি। যতই প্রচারের ঢক্কানিনাদ থাকুক, ‌ব্রিগেডের আসল ছবিটা কেমন ছিল, তা আমরা অনেকেই বুঝতে পারছি। গভীরভাবে বিশ্বাস করি, বামেদের ব্রিগেড তৃণমূলের এই ‘‌মহা ব্রিগেড’‌কে ছাপিয়ে যাবে।
বামেদের যে কোনও সভা–‌সমিতিতে কতগুলো নিয়ম মানা হয়। সে দলের কোন পদে রয়েছেন, সেই অনুযায়ী বক্তা তালিকা তৈরি হয়। তাই অনেক যোগ্য বক্তাও অনেক সময় উপেক্ষিত থেকে যান। আবার যাঁরা বক্তৃতায় ততটা দক্ষ নন, তাঁরা অনেকটা সময় ধরে বক্তৃতা করে যান। জানি, অনেকে বলবেন, কে কেমন বক্তা, সেটা সবসময় মানদণ্ড হওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমার মনে হয়, এবারের ব্রিগেডে কিছুটা অন্য পথ নেওয়া যেতে পারে।

kanhaiya
সিনিয়র বাম নেতৃত্ব অবশ্যই মঞ্চে থাকুন। কিন্তু বক্তা তালিকায় কিছুটা বদল আসুক। বামেদের নতুন ব্রিগেড কতটা তৈরি, সেটা তুলে ধরা এই মুহূর্তে খুব জরুরি। ব্রিগেডে সবথেকে আকর্ষণীয় বক্তা হয়ে উঠতে পারেন কানহাইয়াকুমার। সুধাকর রেড্ডি নন, সিপিআইয়ের প্রতিনিধি হয়ে উঠুন এই তরুণ তুর্কি নেতা। জোর গলায় বলতে পারি, যা লোক হত, কানহাইয়াকুমারকে আনা হলে তার থেকে অন্তত একলাখ লোক বেশি হবে। সর্বভারতীয় স্তরেও চমৎকার একটা বার্তা যাবে। মমতার ব্রিগেডে এত এত বক্তার মোকাবিলা একাই করতে পারেন এই কানহাইয়াকুমার। বাম নেতৃত্ব ভেবে দেখতে পারেন।
সিপিমে তরুণ মুখের অভাব নেই। বিমান বসু সভাপতিত্ব করুন। বক্তা তালিকায় সূর্যকান্ত মিশ্র বা মহম্মদ সেলিম থাকতে পারেন। কিন্তু পাশাপাশি কোনও তরুণ মুখকে অল্প সময়ের জন্য হলেও সুযোগ দেওয়া হোক। শতরূপ ঘোষ বেশ পরিচিত মুখ। চমৎকার বক্তা। টিভিতেও চমৎকার বলেন। কোন মঞ্চে কোন কথা বলতে হয়, জানেন।নতুন করে চেনানোর দরকার নেই।এছাড়াও সায়নদীপ মিত্র, অভয় মুখার্জি, সৃজন ভট্টাচার্য নামের অভাব নেই। কাকে তুলে ধরবেন, সিপিএম নেতৃত্ব ভেবে দেখুন।

shatarup
ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে বলার কথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস বা রাজ্য সম্পাদক নরেন চ্যাটার্জির। কিন্তু এবার তাঁদের বদলে তরুণ তুর্কি আলি ইমরানকে (‌ভিক্টর) যদি বক্তা তালিকায় আনা হয়!‌ নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, কানহাইয়ার পাশাপাশি এই তরুণ তুর্কিকে ঘিরেও ঝড় উঠে যাবে। উত্তরবঙ্গের মানুষ জানেন ভিক্টরের লড়াই, জনপ্রিয়তা ও বাগ্মিতার কথা। সারা বাংলার সামনে তুলে ধরার দারুণ এক সুযোগ। ফব নেতৃত্ব কি তরুণ তুর্কি এই নেতাকে এগিয়ে দেওয়ার উদারতা দেখাবেন!‌

victor10
আর এস পি। কোনও সন্দেহ নেই, ক্ষিতি গোস্বামী দারুণ এক বক্তা। একসময় কত সভায় ঝড় তুলেছেন। এখন তিনি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবু এই মঞ্চে অন্য কাউকে তুলে ধরা হোক। মনোজ ভট্টাচার্য, বিশ্বনাথ চৌধুরিরা পরিচিত মুখ। তবু টিভি–‌খ্যাত অশোক ঘোষের কথা ভেবে দেখতে পারেন। আরও তরুণ মুখ চাইলে রাজীব ব্যানার্জি বা মৃণ্ময় সেনগুপ্তদের কথা ভেবে দেখা যেতে পারে।
মানছি, বামেদের প্রচলিত সভার থেকে বক্তা তালিকা অনেকটাই আলাদা। তবু একবার পরীক্ষা করে দেখতে ক্ষতি কী?‌ নতুনদের এগিয়ে দেওয়ার এটাই তো উপযুক্ত সময়। বেঙ্গল টাইমস মারফত আর্জি তুলে ধরলাম। বাম নেতৃত্ব বিবেচনা করতে পারেন। কর্মী মহলে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সুস্থ একটা বিতর্ক ও মতামত আদান প্রদানের পরিসর গড়ে উঠুক।

 

(‌এটি বেঙ্গল টাইমসের ওপেন ফোরাম। এরকম নানা প্রস্তাব উঠে আসতে পারে। লিখে পাঠান। নির্বাচিত কিছু লেখা প্রকাশিত হবে বেঙ্গল টাইমসে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা:‌ bengaltimes.in@gmail.com)

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.