এবার পুজোয় নেই পাণ্ডব গোয়েন্দা

একে একে পুজো সংখ্যা বেরোচ্ছে। কিন্তু এবার থাকছে না পাণ্ডব গোয়েন্দা। বাবলু–‌বিলু–‌ভোম্বলদের অ্যাডভেঞ্চার কাহিনীর স্বাদ পাবে না বাঙালি!‌ কেন লিখছেন না লেখক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়। সেই উত্তর খুঁজতেই তাঁকে ফোনে ধরলেন সংহিতা বারুই। ‌

বাঙালির কাছে পুজো মানেই একসঙ্গে অনেককিছু। কারও কাছে নতুন জামা–‌কাপড়। কারও কাছে কাশফুল। কারও কাছে শিউলির গন্ধ। আবার কারও কাছে পুজো মানে পুজো সংখ্যা। সেই পুজো সংখ্যাতেও কতরকমের পছন্দ–‌অপছন্দ।
কেউ তাকিয়ে থাকত কাকাবাবুর দিকে। কারও পছন্দ নীললোহিত। কেউ খুঁজত নতুন ফেলুদাকে। কারও পছন্দ শীর্ষেন্দু, কেউ বা সমরেশ। সুনীল তো আগেই হারিয়ে গেছেন। শীর্ষেন্দু–‌সমরেশ–‌সঞ্জীবরা এখনও লিখে চলেছেন। কিন্তু এবার পুজোয় একটা জিনিস খুব মিস করব। সেটা হল পাণ্ডব গোয়েন্দা।

গত কয়েক বছর ধরে শুধুমাত্র পাণ্ডব গোয়েন্দা পড়ার জন্যই বর্তমান নিতাম। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, পাণ্ডব গোয়েন্দা এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলতাম। তারপর আর কোনও লেখাই পড়তাম না। বইটা বাড়ির বড়দের দিয়ে দিতাম। এবার হঠাৎ করে বর্তমানের বিজ্ঞাপনে দেখলাম, পাণ্ডব গোয়েন্দার উল্লেখ নেই। তার মানে এবার পাণ্ডব গোয়েন্দা থাকছে না?‌ কিছুটা হতাশই হলাম। ভাবলাম, কী জানি, পরে হয়ত পাণ্ডব গোয়েন্দার আলাদা করে বিজ্ঞাপন বেরোবে। কদিন পেরিয়ে গেল। তাও সেই পুরনো বিজ্ঞাপনই বেরোচ্ছে। তার মানে এবার বোধ হয় পাণ্ডব গোয়েন্দা থাকছে না।

pandab goyenda3

থাকতে না পেরে ফোন করে বসলাম লেখক ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়কে। কী জানি, বর্তমানে হয়ত বেরোচ্ছে না। অন্য কোনও পত্রিকায় তো বেরোতে পারে। সরাসরি জানতে চাইলাম, এবার পাণ্ডব গোয়েন্দার বিজ্ঞাপন দেখলাম না। আপনি কি লিখছে না?‌ এক কথাতেই থামিয়ে দিলেন প্রবীণ লেখক। বললেন, ‘‌এবার চোখে অপারেশন হয়েছে। তাই এবার ওটা লিখতে পারিনি। আবার লেখা জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় থাকে। পরে লিখলে ওরাও নেবে না। তাই এবার আর লেখা হল না।’‌ তার মানে, অন্য কোথাও বেরোবে না!‌ পুজোটা কেমন যেন বিবর্ণ হয়ে গেল।

লেখকের বয়স সাতাত্তর পেরিয়ে গেলেও এখনও বেশ সক্রিয়। একা একাই দেশ–‌দেশান্তরে বেরিয়ে পড়েন। সেই বেড়ানোর কাহিনীই উঠে আসে বাবলু–‌বিলু–‌ভোম্বল, বাচ্চু, বিচ্চুদের কাহিনীতে। আর শ্রীমান পঞ্চু তো আছেই। আপাতত সামনের বছরের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় কী?‌

মনে মনে বর্তমানের ওপর খুব রাগও হল। লেখক না হয় অপারেশনের জন্য লিখতে পারছেন না। কিন্তু মুখে তো বলে যেতে পারেতেন। লেখক বলে যাচ্ছেন, অন্য কেউ কম্পোজ করে যাচ্ছেন, এমন ব্যবস্থা কি করা যেত না? কদিন আর লাগত?‌ দিন পাঁচেক এভাবে কম্পোজ করতে পারলেই লেখাটা দাঁড়িয়ে যেত। বর্তমান পত্রিকা গোষ্ঠী এমনটা ভাবতে পারল না কেন?‌ তাহলে আমাদের মতো পাঠক–‌পাঠিকারা অন্তত পাণ্ডব গোয়েন্দা থেকে বঞ্চিত হত না।

(‌পুজো সংখ্যা সংক্রান্ত নানা লেখা, স্মৃতিচারণ উঠে আসছে বেঙ্গল টাইমসে। পুজো সংখ্যার নানা লেখা সংক্রান্ত আলোচনাও থাকতে পারে। আপনিও আপনার অনুভূতি পাঠিয়ে দিন বেঙ্গল টাইমসের ঠিকানায়।)‌

bengaltimes.in@gmail.com‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.