পর্বতের মুষিক প্রসব ছাড়া কী বলবেন!

ধীমান সাহা

কী বলবেন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে? পর্বতের মুষিক প্রসব ছাড়া আর কোনওকিছুই মাথায় আসছে না। অনেকে হয়ত অবাক হচ্ছেন। অনেকে বলছেন, দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু কেন জানি না, মনে হচ্ছে, এটাই তো হওয়ার ছিল। সুপ্রিম কোর্ট যে এরকম একটি প্রকাণ্ড অশ্বডিম্ব প্রসব করতে চলেছে, তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল।

supreme court5

এমন রায়ই যদি দেওয়ার ছিল, তাহলে এত মাস ধরে অকারণ ঝুলিয়ে রাখা কেন? বিনা লড়াইয়ে জয়কে প্রথমে স্থগিত রাখা। ভোটকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলা। ভোটের পরেও নানা সংশয় জিইয়ে রাখা। কখনও কখনও মৃদু প্রশ্ন তোলা। কেউ কেউ লিখছিলেন, আদালতের তিরষ্কার। না, সেটা মোটেই তিরষ্কার নয়। আদালত দার্শনিক প্রশ্রয়দাতা হয়ে দাঁড়ায় বলেই এভাবে রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড় করিয়ে রাখার সাহস পায়। আদালত চুপ করে থাকে বলেই ‘অনুপ্রেরণা’র এত বাড়বাড়ন্ত। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই ঝুলিয়ে রাখা বিচারপতিদের থেকে অনুব্রত মণ্ডলরা ঢের ভাল। তারা অন্তত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তারা অন্তত ঝুলিয়ে রাখে না।

এত বার ধরে সওয়াল চলল। তার নির্যাস কী? প্রায় প্রতিবার শুনানির সময় একইরকম যুক্তি। আবার পনেরো দিন পরে তারিখ। পনেরো দিন পরেও সেই একই যুক্তি। আসলে বিচারপতিরা কতটা শুনেছেন, নিজেরাই বোধ হয় মনে রাখতে পারতেন না। তাই আবার নতুন করে সবকিছু শোনাতে হত। তখনই বোঝা গিয়েছিল, এই ঝুলিয়ে রাখা আসলে বিলম্বিত করা। শেষমেষ যাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতবেন, তাঁদের জয় বৈধ ঘোষণা করে দেবেন। ততদিনে মানুষের স্মৃতি অনেকটা ফিকে হয়ে আসবে। মনোনয়ন থেকে ভোট, সব সন্ত্রাসই মানুষ ভুলে যাবে।

কেউ কেউ নাকি সবকিছুর অনুপ্রেরণা। এখন বোঝা যায়, অনুপ্রেরণারও অনুপ্রেরণা থাকে। এমন আদালত থাকলে উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়েই থাকে।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.