দিব্যেন্দু দে
এতদিন পর মনে হচ্ছে, সত্যিই উন্নয়ন হচ্ছে। যে জিনিসটাকে সবথেকে বেশি অপছন্দ করি, অন্তত সেটা হজম করতে হচ্ছে না। কী শান্তি, কী শান্তি। কাকে ধন্যবাদ জানাব, সেটাই বুঝতে পারছি না। স্বরূপ বিশ্বাস, জীবনে প্রথম আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। গ্রহণ করুন।
শ্রীকান্ত মোহতা, আপনাকেও ধন্যবাদ না জানিয়ে পারছি না। আপনার ওপর বড্ড রাগ। কিছুটা কারণে, অনেকটাই অকারণে। ওই যে বলে, দেখতে নারি, চলন বাঁকা। শুধু চলন কেন, আপনার সবকিছুই বড় বাঁকা লাগত। কিন্তু আজ আপনাকে পেন্নাম না ঠুকে পারছি না মশাই। আপনারা যে আমার কী উপকার করেছেন, তা যদি জানতেন!
বউয়ের জ্বালায় বাড়িতে আমি একেবারেই কোণঠাসা মশাই। আরও ভাল করে বলতে গেলে সিরিয়ালের জ্বালায়। সারাক্ষণ ঝম ঝম আওয়াজ। যেন একটা যুদ্ধ হচ্ছে। একটা মাত্র বউ, আমাকে কিনা পাত্তাই দিত না। সারাক্ষণ ওই কুসুম দোলা, জল নুপুর, পাগলা কুকুর— আরও কী সব যেন নাম। সকাল নেই, দুপুর নেই, সন্ধে নেই, রাত নেই। সিরিয়াল চলছেই।
অসহায় হয়ে বীরবূমের কেষ্টদাকে ডাকতাম। গুরু, দাও তো স্টুডিও গুলোর গেটে উন্নয়ন দাঁড় করিয়ে। দেখি ব্যাটারা কেমন শুটিং করে! কেষ্টা দা কথা রেখেছেন। তিনি তো নানা রূপে আসেন। কী জানি, হয়ত স্বরূপ বিশ্বাসের বেশে এসে পণ্ড করেছেন। কী জানি, তিনি হয়ত শ্রীকান্ত মোহতার ছদ্মবেশেও আসতে পারেন। পোসেনজিতের রূপ ধরেই যে আসেনি, সেটাই বা কে বলতে পারে!
যাই হোক বাবা, কটা দিন তো সিরিয়াল বন্ধ। কিছুটা হলেও পরিবারে শান্তি ফিরেছে। রিপিট টেলিকাস্ট হচ্ছে। পুরনো কচুটেপনাগুলোকে গিন্নি ঝালিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু নতুন নতুন কচুটে বুদ্ধি তো আসছে না। এটা যে কত বড় শান্তি, আমার মতো অনেক অসহায় স্বামী বেশ ভাল বোঝে।
কিন্তু আমার কপালে কী আর সুখ সইবে! তিনি যেভাবে জেলায় জেলায় গিয়ে নেতাদের বলে, এই ঝগড়া মিটিয়ে নাও, এখানেও হয়ত তেমনটাই বলে বসবেন। আর কার ঘাড়ে কটা মাথা! তিনি বলবেন, শুটিং চালু, অমনি শুটিং চালু। তবে আমি এটুকু বুঝি, যতক্ষণ তিনি আসরে না নামবেন, এমন ডজন ডজন বৈঠক ব্যর্থ হবে। বা রে! বাকিরা যদি মিটিয়ে দিল, তাহলে তাঁর কৃতিত্ব কোথায়! পোসেনজিৎ যত বড়ই নায়ক হোক, শ্রাবন্তী–মিমিরা যত বড়ই নায়িকা হোক, রাজ–অরিন্দমরা যত বড়ই পরিচালক হোক, আসল চিত্রনাট্য তাঁর হাতে।
মনে রাখবেন, তিনি কিন্তু সিরিয়াল দেখেন।