ঠান্ডার সময় অনেকে ঠান্ডার দেশেই যান। ঠিক তেমনই যদি বর্ষার সময় জলের দেশেই যাওয়া যায়। কাছেই তো মাইথন। ছোট্ট ছুটিতে বেরিয়ে পড়ুন। বেড়ানোর হদিশ দিলেন শ্রীপর্ণা গাঙ্গুলি।।
গরম এলেই অনেকে ছোটেন পাহাড়ে। আর ঠাণ্ডা এলে তো কথাই নেই। তখন পাহাড় থেকে সমুদ্র, জঙ্গল থেকে ঐতিহাসিক স্থান, ধর্মীয় স্থান থেকে নির্জন জায়গা— সবকিছুই কেমন যেন ভাল লাগে। আসলে, তখন পরিবেশটাই বড় মনোরম থাকে। কিন্তু এই বর্ষায় কোথায় যাওয়া যায়? বর্ষা এলেই সবাই কেমন যেন গৃহবন্দী হয়ে পড়েন। অথচ, এই বর্ষায় ঘোরার কত ভাল ভাল জায়গা আছে। দু তিনদিনের ছোট্ট ছুটিতে গেলে মন্দ হয় না।
অনেকে ঠাণ্ডার সময় আরও ঠান্ডার দেশে যান। ঠিক তেমনই বর্ষায় যদি আরও বেশি করে জলের কাছাকাছি যাওয়া যায়! তেমন একটি জায়গা হতেই পারে মাইথন। আমাদের রাজ্য নয়। তবে রাজ্যের নাগালেই। অল্প সময়ে, অল্প খরচে অনায়াসেই ঘুরে আসা যায়।
যদি কলকাতা থেকে যেতে চান? নিজের গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই। ধরে নেওয়া যাক, গাড়ি নেই (কারণ, সেই লোকের সংখ্যাই বেশি)। যে কোনও ট্রেনে বা বাসে আসানসোল চলে আসুন। দক্ষিণবঙ্গের যে কোনও জেলা থেকেই আসানসোল আসার অনেক ট্রেন। যে কোনও একটায় উঠে পড়ুন। সেখান থেকে মোটামুটি এক ঘণ্টার মতো। স্ট্যান্ড থেকে অনেক বাস আছে। যদি একটু আরামে যেতে চান, তাহলে আসানসোল থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে নিতে পারেন।
থাকা নিয়ে চাপ নেবেন না। বেশ কিছু হোটেল, লজ আছে। তবে সবথেকে ভাল ঠিকানা হল মজুমদার নিবাস। ডিভিসি থেকে বুকিং করতে হয়। কলকাতা থেকে যাঁরা বুকিং করবেন, তাঁরা উল্টোডাঙ্গার কাছে ডিভিসি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। এই মজুমদার নিবাস একেবারে জলের ওপরেই। ফুটব্রিজে কিছুটা হেঁটে গিয়েই আপনি পৌঁছে যেতে পারেন।
চারপাশে শুধু জল আর জল। ব্যাগপত্তর রেখে ইচ্ছেমতো বেরিয়ে পড়ুন। বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে ১২টি লকগেট। সেখান থেকেই জল ছাড়া হয়। বাঁধের ওপর থেকেই তাকিয়ে থাকুন। জলের সাম্রাজ্যে মন্দ লাগবে না। ওপারে সবুজ দ্বীপ। ঘুরে আসবেন নাকি? বেরিয়ে পড়ুন ছোট্ট নৌকা ভাড়া করে। মাঝপথে যদি বৃষ্টি আসে? আসুক না, মন্দ কী? একটা পলিথিন জাতীয় কিছু রাখুন। মোবাইল, মানিব্যাগ, ক্যামেরা সেখানে পাচার করে দিন। তারপর যত খুশি বৃষ্টি আসুক। বৃষ্টি দেখলে লুকিয়ে যাওয়া তো আমাদের বারোমাসের অভ্যেস। এখানে এসে না হয় সেই ভয় কেটে যাক। মেঘ দেখলেই যেন চিৎকার করে বলতে পারি, আয় বৃষ্টি ঝেঁপে।