কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি হওয়ায় জেলে গিয়েছিলেন স্নেহাংশুকান্ত আচার্য। বিলেতফেরত ব্যারিস্টার। জ্যোতিবাবুর বিশেষ বন্ধু। বনেদি ঘরের ছেলে। কিন্তু জড়িয়ে পড়েছিলেন বাম আন্দোলনের সঙ্গে।
একদিন হঠাৎ জেলখানায় গাড়ি এসে হাজির। শোনা গেল, তাঁকে যেতে হবে মহাকরণ, মুখ্যমন্ত্রীর জরুরি তলব। স্নেহাংশুবাবু কিছুটা বিস্মিত, ‘কী ব্যাপার ? কাউকে ছাড়া হচ্ছে না। হঠাৎ আমার প্রতি এই দয়া ?’
আনা হল মহাকরণে। ঘরে ঢুকতেই বিধান রায় আপ্যায়ন করে বসালেন। বললেন, স্নেহাংশু, একটা জরুরি কাজে তোমাকে ডেকে পাঠিয়েছি। যাদবপুরে নাকি তোমাদের অনেক জায়গা আছে। আমি ওখানে একটা ইউনিভার্সিটি বানাব। তোমাকে জায়গা দিতে হবে। সর্বহারার পার্টি করো, এত জমি নিয়ে কী করবে ? ওখানে ইউনিভার্সিটি হোক, তুমি চাও না? তবে, এক টাকার বেশি দাম দিতে পারব না।’
বিধানবাবু এমনভাবে বললেন, আর না করার উপায়ই রইল না। চিফ সেক্রেটারিকে আগাম বলা ছিল। তিনি আগেই দানপত্র তৈরি করে রেখেছেন। সই করিয়ে নেওয়া হল স্নেহাংশু আচার্যকে।
যাওয়ার সময় স্নেহাংশুবাবু মজা করে জিজ্ঞেস করলেন, জমি তো নিলেন। এবার কোথায় পাঠাবেন ? বাড়িতে না জেলে ?
বিধানবাবু কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তারপর বললেন, অনেকদিন বাড়ির বাইরে আছো। জেলের খাবার ভাল না লাগারই কথা। ঠিক আছে, তুমি এখন বাড়িতেই যাও। কয়েকদি থাকো। আবার যখন দরকার পড়বে, ঠিক জেলে পাঠিয়ে দেব।