তোর্সা চ্যাটার্জি
রানি লক্ষ্মী বাইয়ের নাম তো শুনেছেন। রানা প্রতাপের নামও শুনেছেন। কিন্তু রানি দুর্গাবতীর নাম শুনেছেন কি? গোন্ড বংশের এই রানির রাজত্ব ছিল আজকের জব্বলপুরে। ১৫৬৪ সালে মোঘল বাহিনি তার রাজ্য আক্রমণ করলে, রানি স্বয়ং হাতির পিঠে সওয়ার হয়ে যুদ্ধে গমন করেছিলেন। তিন তিনবার শত্রুদের পিছু হটিয়ে দিলেও গলায় তীর বিঁধে আহত হন তিনি। পরাজয় অবশ্যম্ভাবী বুঝে, বুকে ছুরি বসিয়ে আত্মহত্যা করেন রানি দুর্গাবতী।
জব্বলপুরে হোটেলের সংখ্যা অনেক। কিন্তু মার্বেল রকের দৃশ্য সব থেকে ভালো দেখা যায় এম পি ট্যুরিজমের মোটেল মার্বেল রকস থেকে। কিন্তু পূর্ণিমা রাতে জব্বলপুরের মার্বেল রক দেখার জন্য অনেকেই মুখিয়ে থাকেন। তাই সেই মোটেলে ঘর নাও পাওয়া যেতে পারে। তবে হতাশ হবেন না। সেখানে ঘর না পেলে নির্দ্বিধায় ঘর বুক করুন মইকাল রিসর্টে।
নর্মদা নদীর উপর বাঁধ দেওয়ার ফলে বারগি নামক স্থানে যে জলাধার তৈরি হয়েছে, তার একদম গা ঘেঁষে এই রিসর্ট। এটিও মধ্যপ্রদেশ পর্যটন দপ্তরের। জলের মধ্যে শ্বেতপাথরের পাহাড় না থাকলেও বহুদূরে সেই জলাশয়কে ঘিরে রয়েছে নীল পর্বতশ্রেণী।
জ্যোৎস্না রাতে দিগন্ত বিস্তৃত নর্মদা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। আর সঙ্গে এলাহি খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা তো আছেই। চুপিচুপি বলে রাখি, হানিমুনের জন্য জায়গাটা একেবারে আদর্শ।
এখান থেকে গাড়ি বুক করে জব্বলপুরের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি ঘুরে নিতে পারেন। আবার স্পিড বোটে চড়ে নর্মদার বুকে অ্যাডভেঞ্চার
স্পোর্টসও করতে পারেন। হাতে যদি সময় বেশি থাকে, বিলাসবহুল লঞ্চে চেপে সারাদিনের জন্য ক্রুজও করতে পারেন।
এই বারগি ড্যামের একেবারে কাছেই রানি দুর্গাবতীর সমাধি। শত্রুর হাতে ধরা দেবেন না বলে, এখানেই আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি।
তাঁর সমাধিস্থলের কাছেই সাজানো উদ্যান। ঘুরতে ঘুরতে দেখে আসুন। আর যদি পুজোর ছুটিতে আসেন, দশমীর দিনটা অবশ্যই এখানে কাটাবেন। বিসর্জনের সময় স্থানীয় দেহাতি মানুষরা যে শোভাযাত্রা করেন, তা দেখার মতো।