২২ জুলাই। মহুয়া রায়চৌধুরির মৃত্যুদিন। দেখতে দেখতে ৩৬ বছর হয়ে গেল। এমনই একটি দিনে হারিয়ে গিয়েছিলেন টলিউডের এই অভিনেত্রী। তাঁর স্মৃতিতে বিশেষ এই লেখা। লিখেছেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ শট
শেষ ছবি
বীরেশ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘আশীর্বাদ’।
চিত্রগ্রাহক শক্তি বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যামেরা বন্দি করলেন মহুয়ার শেষ শট।
আকুল হয়ে কাঁদতে কাঁদতে ফোনে বলছে তাপস পালকে বলছেন, ‘‘আমি ভাল নেই, আমি ভাল নেই আশীষ। তুমি এসে আমাকে নিয়ে যাও।”
সে কি শুধু অভিনয় ছিল?’
ঘোর বর্ষামুখর রাতেই মহুয়া নিজে স্টোভে দুধ গরম করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর ভাবে দগ্ধ হয়ে গেল ।বেহালার ভাড়া বাড়িতে।
আগুনে পুড়ে এগারোটা দিন মৃত্যুর সঙ্গে দ্বন্দ্বযুদ্ধ শেষ করে অগুনতি মানুষকে চোখের জলের শ্রাবণ ভাসিয়ে বিদায় নিয়েছিল সে।
চলে গিয়েছিল স্বামীপুত্রের ভরাট সংসার ফেলে, বাংলা চিত্রজগতের নির্দেশক প্রযোজকদের এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে রেখে।
আত্মহত্যা না হত্যা?
নাকি নিছকই দুর্ঘটনা?
এ সংশয় রয়ে গেছে আজও।
জ্বলে গেল রূপোলী পর্দার সোনার প্রতিমা।
কেউ বলে বিভিন্ন পর্নগ্রাফিতে জড়িয়ে যায় তাঁর নাম,কেউ বলে বহু সম্পর্ক কিংম্বা কীসের থেকে এই বেপরোয়া জীবনযাপন?
শেকড় ছেঁড়া দোলাচল?
অতি সাধারণ পরিবার থেকে হঠাৎ পাওয়া খ্যাতি, দুরন্ত আবেগ ?নাকি স্বামী পিতার সঙ্গে অশান্তি।
রাগ হলে আর ধরে রাখতে পারতনা মহুয়া হয়তো সেই থেকেই এই পরিনাম।
নিজের শেষ নায়ক তাপস কেও নিজের দগ্ধ রূপ দেখাতে চাননি।
“আর্শীবাদ” দেখলে বোঝা যায় কি চরম সেক্স এপিলে সুন্দরী মহুয়া কিন্তু মুখটা অপাপবিদ্ধা দেবী।সব চরম সৌন্দর্য্য হয়তো এভাবেই শেষ হয়।অনামিকা সাহা ডাব করেন মহুয়ার মৃত্যুর পর তাঁর চরিত্র “আর্শীবাদ” এ। হেমন্তের সুরে মহুয়ার লিপে কি দারুন মানিয়েছিল অরুন্ধতী হোম চৌধুরীর গান গুলো।
নায়িকারা এসেছে, আসছে, আসবেও।
কিন্তু মহুয়ার সমতুল নায়িকা আর আসবেনা যার ছিল সুচিত্রার মতো একার জোরে হল হাউসফুল করার ক্ষমতা স্ক্রিন প্রেজেন্স আবার সাবিত্রীর মতো অভিনয় ঘরানা আবার সন্ধ্যা রায়ের মতো পাশের বাড়ির মেয়ের মতো দর্শকের আপন হয়ে উঠত যে।
যারা মহুয়ার মৃত্যুর সঙ্গে দিব্যা ভারতীর মৃত্যুকে তুলনা করেন সেটা করবেন না।মহুয়া দিব্যার চেয়ে অনেক উঁচুদরের অভিনেত্রী নায়িকা ছিলেন।
আজ সেই মহয়ার চলে যাওয়ার কালো দিন 22 শে জুলাই। চরণ ধরেও রাখা গেল না দাদার কীর্তির সরস্বতীকে। আজও মহুয়া কুয়াশাবৃতা।
(বেঙ্গল টাইমসের বিশেষ ফিচার— আশির দশক। সেই সময়ের নানা ঘটনা, নানা চরিত্রকে ফিরে দেখা। এই লেখায় উঠে এল মহুয়া রায়চৌধুরির কথা। যিনি ১৯৮৬ সালের ঠিক এই দিনে হারিয়ে গিয়েছিলেন। এরকম আরও নানা লেখা আপনিও লিখতে পারেন। পাঠিয়ে দিন বেঙ্গল টাইমসের ঠিকানায়। ঠিকানা: bengaltimes.in@gmail.com)