নির্মল দত্ত
কল্যাণ চৌবের কাছে কখন বাইচুং ভুটিয়াকে হারতে হয়?
উত্তর একটাই, যখন শাসকদল ভোটের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে।
ঠিক সেটাই হল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে।
এটা ঘটনা, বছরের পর বছর রাজনীতিকদের হাতেই থেকে এআইএফএফ। কখনও প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, কখনও প্রফুল্ল প্যাটেল। সেখান থেকে বের করে আনাটা জরুরি ছিল। কিন্তু রাজনীতি দূর করার নামে যা হল সেটাকে রাজনীতি ছাড়া কী বলবেন?
শাসকের দখলদারি আরও বেশি করে প্রকট হয়ে এল। এর আগে রাজনীতির লোকেরা ক্ষমতায় ছিলেন ঠিকই, কিন্তু শাসকদল এভাবে নিজেকে জড়ায়নি। এবার দখলদারি মানসিকতা শুরু থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল।
কল্যাণ চৌবেকে প্রাক্তন ফুটবলার হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। হ্যাঁ, কল্যাণ প্রাক্তন ফুটবলার, এই সত্যিটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। দেশের হয়েও খেলেছেন। দুই প্রধানের হয়েও খেলেছেন। ভিনরাজ্যেও খেলেছেন। কিন্তু লোকসভায় তিনি কৃষ্ণনগর থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। বিধানসভায় তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন মানিকতলা থেকে। অর্থাৎ, কল্যাণ কোনও এক সময় ফুটবলার থাকলেও বর্তমানে পুরোদস্তুর রাজনীতিবিদ।
বাইচুং ভুটিয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক সংস্রব ছিল। তিনিও একসময় লোকসভা, বিধানসভায় লড়েছেন। এমনকী সিকিমে নিজের দলও খুলেছিলেন। কিন্তু যেহেতু তিনি শাসক দলের আশ্রিত নন, তাই তিনি ব্রাত্য। তাই ভোটাভুটিতে কল্যাণ পান ৩৩ ভোট, সেখানে বাইচুং পান মাত্র ১ ভোট। এমনকী বাইচুংয়ের হয়ে যাঁরা প্রস্তাবক বা সমর্থক ছিলেন, সেই দুখানি ভোটও পাননি।
ফুটবল দিয়ে হয়ত শুরু হল। আগামীদিনে বিভিন্ন খেলায় এই প্রবণতা দেখা যাবে। হয়ত সামনে কোনও প্রাক্তন খেলোয়াড়কেই রাখা হবে। কিন্তু আড়ালে থাকবে রাজনীতি। ক্রীড়া প্রশাসন রাজনীতি মুক্ত আর হল কই? বরং, আরও বেশি করে রাজনৈতিক আবর্তেই জড়িয়ে গেল।