সোহম সেন
সময়টা ২০১১। বিধানসভা ভোটের ঠিক কয়েকমাস আগে। প্রতি রাজ্যেই কয়েকজন ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বেছে নেয় নির্বাচন কমিশন। তাঁদের কাজ হল, নির্বাচন কমিশনের হয়ে ভোটারদের ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো। স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমবঙ্গের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলিকে।
সৌরভ তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। কোনও দলের সঙ্গেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নন। পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি। হাতের সামনে এমন তারকা থাকতে আর কার ওপরই বা ভরসা রাখবে নির্বাচন কমিশন!
কিন্তু সৌরভের নামেও আপত্তি জমা পড়ল। শুধু মৌখিক বিবৃতিতে ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ রইল না। একেবারে তৃণমূলের লেটারহেডে নির্বাচন কমিশনের কাছে আপত্তি জানানো হল। লেখা হল, সৌরভ শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত। তাই তাঁকে নির্বাচন কমিশনের দূর করা চলবে না।
রাজ্যের মূল বিরোধী দল যদি আপত্তি জানায়, তাহলে তো মান্যতা দিতেই হয়। সেটাই হল। তৃণমূলের চিঠির ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন সৌরভকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করল না।
আরও একটা ছোট্ট ঘটনার কথা তুলে ধরা যাক। তখন নাইট রাইডার্স টিমে সৌরভকে আর অধিনায়ক করা হল না। অমনি নিউ আলিপুরে পোস্টার পড়ে গেল, দাদা থেকে দাদুভাই/তবু ক্রিকেট খেলা চাই। ইঙ্গিতটা পরিষ্কার। সৌরভ কেন এখনও ক্রিকেট খেলছেন। একটা দুটো নয়, নিউ আলিপুর জুড়ে সংগঠিতভাবে এই পোস্টার ছড়ানো হল। আয়োজনে বিশেষ একটি পুজো কমিটি। যার মাথা কে? সেটা না বললেও সবাই বুঝতে পারছেন।
সৌরভ সম্পর্কে এই হল তৃণমূলের মনোভাব। আজ মুখ্যমন্ত্রী কিনা দেখাচ্ছেন তিনি কত বড় সৌরভ অনুরাগী। আসলে, বাঙালির স্মৃতি বড়ই দুর্বল। সে অতীতের সবকিছু কেমন বেমালুম ভুলে যায়।