রাতের ট্যাক্সি চাই!‌ ‘‌না’‌ শোনার জন্য তৈরি থাকুন

রাতের কলকাতায় ট্যাক্সি ধরা মানে ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা। প্রায় সবার কাছেই আপনি ‘‌না’‌ শোনার জন্য তৈরি থাকুন। বোঝাই যায়, ট্যাক্সির ওপর পুলিশের কোনও নিয়ন্ত্রণই নেই। ওপেন ফোরামে এমনই অভিজ্জতার কথা লিখেছেন মলয় সাহা।।

রাতের কলকাতায় ট্যাক্সি ধরা যেন ভয়ঙ্কর এক অভিজ্ঞতা। মোটামুটি সন্ধে সাতটা বাজলেই ট্যাক্সি পাওয়ার নিশ্চয়তা প্রায় নেই বললেই চলে। অন্তত কুড়িটি ট্যাক্সি ফাঁকা থাকলেও মুখের ওপর ‘‌না’‌ বলে চলে যাবে। অন্তত দশটি ট্যাক্সি তিন গুন ভাড়া চেয়ে বসবে। আরও অন্তত দশটি ট্যাক্সি শুনতেই চাইবে না, আপনি কোথায় যেতে চান। আশা করি, অনেকেরই আমার মতোই অভিজ্ঞতা।

 

তিন চারদিন আগের কথা। তখন রাত আটটা হবে। বউবাজারের মোড়ে অন্তত ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে রইলাম ট্যাক্সির জন্য। অত্যন্ত বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা। একটি বাসে এলাম ওয়েলিংটন। সেখান থেকে প্রায় একই রকম অভিজ্ঞতা। ক্রমশ বিরক্তি বাড়ছিল। মনে হচ্ছিল, কলকাতার ট্যাক্সি কোনও আইনের শাসনের পরোয়া করে না। যতজন ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে কথা হল, তাঁদের মধ্যে অন্তত আশি ভাগ বাংলায় কথাও বললেন না। অর্ধেকের বেশি চালকের কাছ থেকে পেলাম দুর্ব্যবহার বা উপেক্ষা। দুটোই অপমানজনক। এ কোন ‘‌সভ্য শহরে’‌ বাস করছি?‌ এমন এক এ ওয়ান সিটি, যেখানে সাড়ে আটটা–‌নটা বেজে গেলে অনেক জনপ্রিয় রুটেও বাস বন্ধ হয়ে যায়। কাকে ছেড়ে কার ওপর রাগ করব, সেটাই ভেবে পাচ্ছিলাম না। পরিবহণ বা পুলিশ দপ্তর বলে কিছু আছে, সেটাই মনে হচ্ছিল না। থাকলেও তাদের যে ট্যাক্সিচালকরা কোনও পরোয়াই করেন না, এটা বেশ বুঝতে পারলাম।

 

এর আগেও অন্তত শতাধিকবার একইরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। নম্বর লিখে পুলিশের কাছে জমা দিয়েছি। আমি নিশ্চিত, কোনও পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। এক দুজন ট্যাক্সিচালক রিফিউজ করতেই পারেন। কিন্তু রিফিউজটাই যখন নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়, তখন বুঝতে হবে, ট্যাক্সির ওপর প্রশাসনের ন্যূনতম নিয়ন্ত্রণটুকুও নেই। অন্তত কয়েকজনকেও যদি জরিমানা করা হত, যাত্রীদের যদি আশ্বস্ত করা হত, তাহলে এরকম অবস্থা হত না। ট্যাক্সি চালকরাও সচেতন থাকতেন। যাত্রীরাও কিছুটা আশ্বস্ত হতেন। কিন্তু পুলিশের সেই সময় কোথায়!‌ সেই সদিচ্ছা বা সৎসাহস কোথায়?

যদি কোনও পাঠকের বিশ্বাস না হয়, তিনি রাত আটটার পর কোনও একটি জায়গায় দাঁড়ান। তাহলেই বুঝতে পারবেন পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। ডিসি ট্রাফিক বা স্বয়ং নগরপাল সাধারণ পোশাকে দাঁড়ান। নিজের দপ্তরের কঙ্কাল দশা নিজেরাই দেখতে পাবেন।

বেঙ্গল টাইমসের মাধ্যমে কলকাতা পুলিশ ও পরিবহণমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলাম। জানি না কোনও ফল হবে কিনা।

(‌এটি ওপেন ফোরাম। আপনিও নাগরিক জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে লিখতে পারেন। খোলা মনে নিজের অভিজ্ঞতা ও হয়রানির কথা লিখে পাঠাতে পারেন। আমরা চেষ্টা করব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এইসব অভিযোগ পাঠিয়ে দেওয়ার। লেখা পাঠানোর ঠিকানা:‌ bengaltimes.in@gmail.com) ‌

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.