অজয় নন্দী
আগের মরশুমে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল কত নম্বরে ছিল? তার আগেরবার? একেবারে শেষ সারিতে ইস্টবেঙ্গলের স্থান বরাদ্দ।
সামনের মরশুমের দল গঠন নিয়ে এখনও বিরাট কিছু অগ্রগতি হয়েছে, এমন খবর নেই। এবারও ভাল মানের দল গঠন করা সম্ভব হবে না। প্রথমত, গত কয়েক বছরে এই যাদের ট্র্যাক রেকর্ড, সেখানে কোনও ভাল মানের ফুটবলার কেনই বা খেলতে আসবেন!
দ্বিতীয়ত, অধিকাংশ ফুটবলারের সঙ্গেই সেই ক্লাবের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি। সেই চুক্তি ভেঙে তাঁদের আনতে গেলে মোটা অঙ্কের ট্রান্সফার ফি দিয়ে আনতে হবে। এতখানি টাকা কি ট্যাঁকে আছে?
তৃতীয়ত, দল গঠনে সেই সদিচ্ছাটাও নেই। এখনও স্পনসর আর ক্লাবকর্তারা গ্যালারি শোয়েই ব্যস্ত। একদল আরেক দলকে চিঠি লেখে, সেই চিঠি পৌঁছনোর আগেই মিডিয়ার কাছে পৌঁছে যায়। এমনকী কোন কোন প্লেয়ার চাই, সেই লিস্টও ফাঁস হয়ে যায়। ক্লাব কর্তারা সেগুলো দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবের অফিসিয়ার ফেসবুক পেজে আপলোড করেন। নিম্নস্তরের এই ভাঁড়ামি দিনের পর দিন চলে আসছে।
একেবারে সাম্প্রতিক সংযোজন। ক্লাবে সদস্যদের বসার জন্য জমকালো ব্যবস্থা হল। এই আকালের বাজারে এটাই যেন মেগা ইভেন্ট। সেইসঙ্গে ধুমধাম করে চালু হয়ে গেল বার। মানে, পানশালা। আর সেসবের উদ্বোধন করলেন কে? সর্বঘটে কাঁঠালি কলা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী। নিজের কাজে অষ্টরম্ভা। বার উদ্বোধন করে সেই ছবি ছাপিয়েই তিনি ধন্য। ছবির কাঙ্গাল ক্রীড়ামন্ত্রী সবকিছুর মধ্যেই ছবির আইটেম খোঁজেন। তাই সেলিব্রিটি দেখলেই হ্যাংলার মতো নিজের মুখ বাড়িয়ে দেন। সত্যিই তো, বার উদ্বোধনের জন্য এমন ‘নিষ্কর্মা’ মন্ত্রীর চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি আর কেই বা হতে পারতেন!
ক্লাবকর্তাদেরও ধন্য। গত দু’বছরে সীমাহীন ব্যর্থতা। এ বছরও দল গঠন বিশ বাঁও জলে। তারপরেও কেউ ঘটা করে বার উদ্বোধন করতে পারে! এমন অপদার্থ কর্তারা থাকলে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করাও যায় না। কিন্তু কর্তারা এই স্তরের ভাঁড়ামি দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন কোন ভরসায়? কারণ, তাঁরা জানেন, সমর্থকদের দৌড় ওই ফেসবুক পর্যন্ত। তাঁদের যত বিপ্লব, ফেসবুকেই। আর মূলস্রোত মিডিয়া। সেলফি তোলায় ব্যস্ত মূলস্রোত বঙ্গজ মিডিয়া দন্ত বিগলিত করে সেলফি তোলাতেই আনন্দ পায়। এঁদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ‘বার’ এ একটু ডিসকাউন্ট দিলেই এঁরা ধন্য ধন্য রব তুলে দেবেন।