স্মৃতিটুকু থাক
আষাঢ় মাস যাই যাই । শ্রাবণ মাস প্রায় এসেই গেল। মাঝে মাঝেই নামছে বৃষ্টি। একটি বৃষ্টির দিনের কথা বলি। তখন আমাদের অল্প বয়স। বৃষ্টিকে পরোয়া করতাম না। বৃষ্টির মাঝেই খেলতাম। ক্রিকেটটা খেলা যেত না (তাছাড়া, তখন শীতকাল ছাড়া ক্রিকেট সেভাবে হতও না)। তবে ফুটবলটা দিব্যি খেলা যেত।
একবার আমরা দল বেঁধে ফুটবল খেলছি। হঠাৎ এক ভদ্রলোক এসে দাঁড়ালেন। বেশ কিছুক্ষণ আমাদের খেলা দেখলেন। মাঠে নেমে আমাদের একজনকে বললেন, আমি কি তোমাদের সঙ্গে খেলতে পারি ? আমরা রাজি হয়ে গেলাম। তিনি আমাদের দলেই যোগ দিলেন। আমরা তখন দু গোলে পিছিয়ে। তিনি বললেন, অনেকদিন খেলিনি তো। জানি না, কতটা পারব। তবে, আমি একটু সামনের দিকে খেলছি। গোল বাঁচানোর থেকে এখন গোল করাটা জরুরি।
আমাকে বললেন, ঠিকঠাক পাস বাড়িও। তিনি নিজেই তিন-চারজনকে কাটাতে শুরু করলেন। বোঝা গেল, একসময় বেশ ভালই খেলতেন। প্র্যাকটিসের অভাব থাকলেও পায়ের শিল্পে মরচে পড়েনি। দূর থেকে নেওয়া একটা শটে গোলও করলেন। পাঁচ মিনিটের মাথায় আরও একটা। এটা অবশ্য হেড করে। আরও একটা গোলের সুযোগ এসে গেল। চাইলে হয়ত হ্যাটট্রিক করতেই পারতেন। কিন্তু তা না করে আমাকে পাস বাড়ালেন। আমি গোল করলাম। বৃষ্টি থেমে গেল। সেই মানুষটা হঠাৎ বললেন, আমি চলি। তোমরা খেলো। আমাদের জিতিয়ে দিয়ে ভিজে যাওয়া ওই মানুষটা কোথায় যে হারিয়ে গেলেন!
মানস মজুমদার, বেহালা, কলকাতা ৩৪
(আপনিও লিখুন..
এই বিভাগ পাঠকদের মুক্তমঞ্চ। আপনিও এখানে মন খুলে নিজের কথা লিখতে পারেন। পুরানো কোনও স্মৃতির কথা তুলে আনতে পারেন। কারও কাছে নিজের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পারেন। শৈশব, কৈশোরের টুকরো টুকরো স্মৃতি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। এমনকি কোনও ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হলে, তা এখানে লিখে মনকে কিছুটা হালকা করতে পারেন। চেষ্টা করুন, ১৫০-২০০ শব্দের মধ্যে নিজের অনুভূতিকে মেলে ধরার। যাঁরা গুছিয়ে লিখতে পারেন না, তাঁরাও হীনমন্যতায় ভুগবেন না। আপনি আপনার মতো করে লিখে পাঠান। আমরা সাজিয়ে নেব। লেখা পাঠানোর ঠিকানাঃ bengaltimes.in@gmail.com )