ঘটা করে হয়ে গেল চলচ্চিত্র উৎসব। এই চলচ্চিত্র উৎসহ হয়তো বইমেলার মতো এত মানুষের মিলনক্ষেত্র নয়, তবু শিক্ষিত, রুচিশীল বাঙালির কাছে এর আলাদা একটা আবেদন রয়েছে।
এখন দেশ–বিদেশের ছবি মোবাইলেই দেখা যায়। কোনওটা ইউটিউব চ্যানেলে, আবার কোনওটা বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। তবু হলে বসে সিনেমা দেখার একটা আলাদা রোমাঞ্চ আছে।
আমরা বাঙালিরা যতটা আন্তর্জাতিক, ততটা ভারতীয় এখনও হয়ে উঠতে পারিনি। কথাটা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আমরা ফরাসি সাহিত্য, রুশ সাহিত্য, লাতিন আমেরিকার সম্পর্কে যদিও অল্পবিস্তর চর্চা করি বা শুনি, ভারতের অন্যান্য ভাষার সাহিত্য সম্পর্কে ততটাই উদাসীন। বইমেলায় বিভিন্ন দেশকে নিয়ে থিম কান্ট্রি করা হয়। কিন্তু ভারতের অন্যান্য ভাষায় কী সাহিত্য রচনা হয়েছে বা হচ্ছে, সেই সম্পর্কে জানার চেষ্টাই করি না। থিম কান্ট্রির মতো থিম স্টেট কি করা যায় না? কোনওবার ওড়িয়া সাহিত্য, কোনওবার মারাঠি বা কন্নড় সাহিত্য, কোনওবার হয়তো হিন্দি সাহিত্যের দিকেও ফোকাস করা যায়। চলচ্চিত্র উৎসবের ক্ষেত্রেও, অন্যান্য ভাষার বাছাই করা সিনেমা আরও বেশি করে দেখানো যায় কিনা, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা জরুরি। আমাদের যেমন ‘পথের পাঁচালি’ বা ‘মেঘে ঢাকা তারা’ আছে, অন্য ভাষাতেও এমন কালজয়ী ছবি নিশ্চয় আছে। সাব টাইটেল বা অন্য ভাষায় ডাবিং করিয়ে সেই ছবি দেখানোই যায়। শুধু নতুন ছবি নয়, পুরনো ছবিও আসুক উৎসবের আঙিনায়। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পাশাপাশি আমাদের শহরে একটা জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসব করা যায় কিনা, তা নিয়ে ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই। পাশাপাশি গিল্ড কর্তারাও ভেবে দেখুন, বছরের মাঝামাঝি বা পুজোর পরে ছোট আকারের হলেও একটা জাতীয় বইমেলা আয়োজন করা যায় কিনা।
