অজয় নন্দী
এই বছর জানুয়ারির কথা। সিডনিতে শেষ টেস্ট। ভারত তার আগেই সিরিজ হেরে গেছে। হঠাৎ দেখা গেল, অধিনায়ক রোহিত শর্মা দলের বাইরে। নেতৃত্ব দিচ্ছেন যশপ্রীত বুমরা। অবশ্য দু’একদিন আগে থেকেই খবরটা হাওয়ায় ঘোরাফেরা করছিল। কোচ গৌতম গম্ভীর নাকি রোহিতকে শেষ টেস্টে দলে রাখতে চাইছেন না। দলের নির্বাচিত অধিনায়ক। সিরিজের মাঝপথে এভাবে তাঁকে বাদ দেওয়া যায়! কিন্তু সেটাই হয়েছিল। যা ভারতীয় ক্রিকেটে নজিরবিহীন।
এবার বিরাট কোহলি। তিনি সিডনি টেস্টে খেলেছিলেন ঠিকই। দু’ইনিংসেই ব্যর্থ। দেশে ফিরে এসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দেশকে জেতালেন। আইপিএলের মঝপথেই টেস্ট ক্রিকেটকে ‘আলবিদা’ করে দিলেন। অর্থাৎ, তাঁর জীবনে সিডনি টেস্টটাই হয়ে উঠল শেষ টেস্ট। আর রোহিত। তিনিও ইংল্যান্ড সফরের ঠিক আগে টেস্ট থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন। অর্থাৎ, তাঁর জীবনে শেষ টেস্ট হয়ে রইল মেলবোর্নের বক্সিং ডে টেস্ট। কারণ, সিডনি টেস্টে তিনি মাঠের বাইরে।
দু’জনের কাছে সিডনির অনুভূতি ছিল দু’রকম। রোহিত অধিনায়ক হয়েও ছিলেন দলের বাইরে। আর বিরাটের কাছে সিডনি মানে বিষণ্ণ বিদায়ী ম্যাচ। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ একদিনের ম্যাচ ছিল সিডনিতেই। প্রথম দুই ম্যাচে হারা ভারতের দুরন্ত প্রত্যাবর্তন সেই সিডনিতেই। রোহিতের ব্যাট থেকে এল দুরন্ত শতরান, আর বিরাট পেলেন লড়াকু ৭৪। দুজনেই অপরাজিত। সিডনি যেন কানায় কানায় সব ফিরিয়ে দিল।
রোহিত–বিরাটের মতো মহাতারকাকে নিয়ে কতই গুঞ্জন, কতই জল্পনা। এই সিরিজের পরই তাঁরা বাদ পড়তে পারেন, এমন খবর হাওয়ায় ভাসছিল। সত্যিই, সিডনিতে এই দুরন্ত কামব্যাক না হলে গৌতম গম্ভীর অ্যান্ড কোং হয়তো সেই পথেই হাঁটতেন। তাই বিরাট–রোহিতের লড়াইটা শুধু অস্ট্রেলীয় বোলারদের বিরুদ্ধে ছিল না। ছিল দলের কোচ, নির্বাচকদের সঙ্গেও। দুজনেই বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের নিয়ে এখনই শেষ কথা বলার সময় আসেনি। তাঁরা কখন থামবেন, তাঁরাই ঠিক করবেন। দু’বছর পরের বিশ্বকাপে তাঁরা খেলতে পারবেন কিনা, জানি না। তবে সিডনিতে তাঁরা যে যোগ্য জবাব দিলেন, এটা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। জানুয়ারির সিডনি, আর অক্টোবরের সিডনি, কত ফারাক!
