দেশপ্রেম নয়, স্রেফ অসভ্যতা

প্রসূন গুপ্ত

আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের ক্রমশ হাসির খোরাক করে তুলছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এখন টাকার দাপট আছে, বিশ্ব ক্রিকেটের ওপর নিয়ন্ত্রণ আছে। তাই নানা রকম বায়না ধরেও দিব্যি পার পেয়ে যাচ্ছে বিসিসিআই। যাবতীয় ছেলেমানুষিকে সমর্থন দেওয়ার জন্য পেটোয়া মিডিয়া আছে। নির্বোধ ভক্তকূল আছে।

এশিয়া কাপের শুরু থেকেই অদ্ভুত সব বায়না। আমরা বিপক্ষ দলের সঙ্গে করমর্দন করব না। টসের সময়েও করব না। খেলার পরেও করব না। বলতে ইচ্ছে করে, করমর্দন করতে এতই যখন অনীহা, তখন খেলতে যাওয়ার দরকার কী?‌

ফাইনালের পর যা হল, সেটা আরও বড় ছেলেমানুষী। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেও ট্রফি নিল না ভারতীয় দল। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের যিনি প্রধান, তিনি পাক বোর্ডেরও প্রধান। অতএব, তাঁর হাত থেকে ট্রফি নিলে জাত চলে যাবে। প্রথমত, তিনি পাক বোর্ডের সভাপতি হিসেবে এই ট্রফি দিচ্ছেন না। তিনি ট্রফি দিতেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিরে সভাপতি হিসেবে। এটা একেবারে ভিন্ন এক পরিচয়। কিন্তু দুটো সত্তাকে জোর করে গুলিয়ে ফেলা হল।

ক্রিকেটাররা কি বলেছিলেন, আমরা ট্রফি নিতে চাই না?‌ তাঁদের ওপর নিশ্চিতভাবে এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আসলে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এখন শাসকদলের জো হুজুর সংস্থায় পরিণত হয়েছে। কে কোন পদে বসবেন, অমিত শাহ ঠিক করে দিচ্ছেন। ক্রীড়াসূচি কী হবে, সেটাও রাজনৈতিক নির্দেশে ঠিক হচ্ছে। সরকার ঘৃণা ছড়াতে চায়, অতএব বোর্ডও তাই চায়। বোর্ড যা চায়, ক্রিকেটারদেরও তাই চাইতে হচ্ছে।

নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডায় ক্রিকেটারের শামিল করা কি খুব জরুরি?‌ রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ঘৃণা ছড়িয়ে শান্তি হচ্ছে না?‌ এবার এশিয়া কাপের মাঠকে ঘৃণার মঞ্চ বানাতে চান?‌ কী আশ্চর্য, এটাকে দেশপ্রেম বলে চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। না, এর পেছনে কোনও দেশপ্রেম নেই। ক্রিকেট মাঠে যা হল, তা স্রেফ অসভ্যতা।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *