সুমন সিংহ
মেট্রো রেলকে একসময় আমরা বলতাম পাতাল রেল। এখন মাটির ওপরেই ছুটতে দেখা যায়। ফলে, এখন আর পাতাল রেল বলতে তেমন শোনা যায় না।
শিয়ালদার সঙ্গে সল্টলেক আগেই যুক্ত হয়েছে। সেই ট্রেন দিব্যি চলছে। আবার হাওড়া থেকে ধর্মতলা রুটেও ট্রেন চলছে। এটি অবশ্য যথার্থই পাতাল রেল। কারণ, ট্রেন শুধু মাটির তলা দিয়ে নয়, একেবারে গঙ্গার তলা দিয়ে ছুটছে।
মাঝে বাকি ছিল ধর্মতলা থেকে শিয়ালদহ অংশটুকু। এই অংশটুকু জুড়ে গেলেই হাওড়া থেকে সরাসরি আসা যাবে সল্টলেকের করুণাময়ী বা সেক্টর ফাইভে। সেক্টর ফাইভ বা নিউটাউনে কয়েক লক্ষ ছেলে মেয়ে কাজ করেন।
তাঁদের অনেকেরই বাড়ি কলকাতার বাইরে শহরতলিতে। অনেকেই হাওড়ায় ট্রেন থেকে নেমে অনেক দুর্ভোগ সহ্য করে সেক্টর ফাইভে পৌঁছোয়। বাসগুলো এতটাই ভিড় থাকে, বাইরে থেকে তাকানো যায় না। ভেতরে যাঁরা থাকেন, তাঁদের যে কী দুর্ভোগ পোহাতে হয়, সহতেই অনুমেয়। আরও খারাপ লাগে বিকেল বা সন্ধের দিকে। কাজ শেষ করে তাঁরা যখন বাড়ি ফেরেন, বাসে ওঠা যেন এক যুদ্ধ।
মেট্রো চালু হয়ে গেলে এই সমস্যা অনেকটাই কমবে। তখন সল্টলেক থেকে অনায়াসেই হাওড়া পৌঁছোনো যাবে। ধর্মতলা (এসপ্লানেড) থেকে শিয়ালদা অংশের কাজ নানা জটিলতায় বারবার থমকে গেছে। খবরে প্রকাশ, এই দুই স্টেশনের মাঝে নাকি ট্রায়াল রান শুরুও হয়ে গেছে।
তবে আমাদের দেশে রেলের সঙ্গে ভোটের একটা সম্পর্ক আছে। ২০২৫ সালে এই রাজ্যে কোনও ভোট নেই। কী জানি, সেই কারণে কেন্দ্র হয়তো গড়িমসি করতেও পারে। কেন্দ্রের শাসকরা ভেবে নিতেই পারেন, এই বছর যখন ভোট নেই, তখন ট্রেন চালু করে কী লাভ হবে? তার থেকে পরের বছর ভোটের আগে উদ্বোধন হওয়াই ভাল। টাটকা স্মৃতি হিসেবে মানুষের মনে থাকবে।
রেল কর্তাদের কাছে অনুরোধ, এমনিতেই অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। প্রকল্পের খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনই নানা দীর্ঘসূত্রিতায় সময়ও বেড়েছে। কাজ যদি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে দ্রুত ধর্মতলার সঙ্গে শিয়ালদহকে জুড়ে দেওয়া হোক। এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হোক। মোদ্দা কথা, হাওড়া থেকে সেক্টর ফাইভ নিরবিচ্ছিন্নভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হোক।